Sunday, 8 January 2017

গল্প: তোমার জন্য কাঁদে মন

লেখা:... shakil ahmed
.
.
নিশু মেয়েটা ছিল ভীষন বদমেজাজি। একটু
কিছুতেই হুট হাট করে রেগে যেত সে। নিশুর
করা একটু রাগটাই তার জীবনে কাল হয়ে দাঁড়ায়। তার
জীবনের সব থেকে দামি জীনিসটা ছিল তার
বেস্ট ফ্রেন্ড নীলয়কে নিয়ে। যাকে সে তার
জীবনের সব থেকেও বেশি ভালবাসতো।
.
নীলয়ের সঙ্গে ফেবুতে পরিচয় হয় নিশুর একটা
ফটো কমেন্টের থেকে। নিশু তার ফেসবুক
অাইডিতে ফটো আপ দিত। নীলয় প্রথমে তাকে
বলে
..এটা কি তোমার ফটো।(নীলয়)
..জ্বী। আমার ফটো।
..আচ্ছা আমি কি তোমার সঙ্গে পরিচিত হতে পারি??
..জ্বী, হ্যাঁ।
এভাবে কথা চলতে থাকলো তাদের মধ্য। বিভিন্ন
রকমের কথা চলে। এক পর্যায়ে দেখা যায় তারা
দুজন দুজনকে চেনে। বেড়ে যায় তখন তাদের
মধ্যে অারো কথা। গভীর রাত পর্যন্ত কথা হত
তাদের। এমনকি দিনের প্রায়টা সময়েও।
.
শুরু হতে থাকে তাদের মধ্যে শেয়ারিং, কেয়ারিং ও
ডেয়ারিং। একজন আরেক জনের প্রতি দুর্বল হয়ে
যায় বেশ খানিকটা। কেউ কারো সঙ্গে কথা না বলর
থাকতে পারত না। আর হাসি তামাশা,ঝগড়া খুনশুটিত
আছেই। থাকবেওবা না কেন?? এসব ছাড়াকি আর
একটা কপোত কপোতীদের মধ্যে প্রেমের
লিংক কি কঠোর হয়???
.
নিশু মেয়েটা মাঝে মধ্যে অনেক ক্ষিপ্ত হয়ে
যেত তার এই দূরারোগ্য নামক বদমেজাজি
রোগের কারনে। এর কারনটা অবশ্য নীলয় ছিল।
নিশু যে জীনিসগুলা পছন্দ না করত সেগুলা নীলয়
একটু বেশিই করে ফেলত শুধু নিশুকে রাগানোর
জন্য। অার কোন উদ্দেশ্য ছিলনা নীলয়ের।
.
নীলয়ের ভাল লাগতো নিশুকে রাগাতে। কারন,
নীলয় জানত যে মেয়েদের রাগালে নাকি সেই
মাপের দেখাই। কিন্তু নীলয় ত নিশুকে আগে
কখনো রাগিনি ভাবে থাকাটা দেখেনি। তাই সে মনে
মনে কল্পনা করতে থাকে রাগিনি নিশুকে নিয়ে।
(প্রতিটা কপোত -কপোতীদের মধ্য দেখবেন
বফ গফকে রাগায়। কারন, ছেলেরা তার সব প্রিয়
মানুষদের রাগাতে একটু বেশিই লাইক করে।যানিনা
মেয়েদের কেমন কি!!!)
.
এর মধ্যে তাদের আলাপের প্রায় ৫ -৬ মাস হয়ে
গেল। নীলয় বার বার নিশুকে বলত তার সাথে দেখা
করার জন্য। কিন্তু নিশু কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না। কারন,
যেখানটাতে তাদের দেখা করার কথা ছিল তা নিতান্তই
দুজনের গ্রামের বাইরে।
.
তাছাড়া নিশু যে দিন নীলয়ের সাথে দেখা করতে
যাবে তার পরের দিন নীলয় চলে যাবে। ঠিক এই
কারনেই নিশু ফার্স্টে দেখা করতে চাইনি। কিন্তু
নীলয় যে নাছোড় বান্দা। কিছুতেই না দেখে
ছাড়বে না। তখনে___
..নিশু তোমাকে অাসতেই হবে।(নীলয়)
.. যদি তুমি থাকো তবেই আমি যাব।(নিশু)
..ওকে, আমি থাকবো।
.
মাঝে মধ্যে তাদের ফোনালাপও হতো। বেস
সময় কথা চলতো তাদের। কথার এক ফাঁকে নীলয়
বলে ওঠে__কি বেপার তুমি আসবেনা?? নিশু তখনে
নীলয়ের মুখের উপর ঠাস করে বলে দেয়,
সে যাবে না। নীলয় অনেক অনুরোধ করে
নিশুকে যাওয়ার জন্য কিন্তু তাতে কোন লাভ
হলোনা।
.
এর পর তাদের মাঝে ২ দিন কোন যোগাযোগ
হয়নি। দু'দিন পর ঠিক সাড়ে দশটার দিকে নিশু
নীলয়কে ফোন দেয়।
..হ্যাঁলো! কোথায় তুমি?????(নিশু)
..কেনো?? (নীলয়)
..না মানে এমনি, বলনা_____
..আমি বাড়িতেই,,,,,,
..একবার আমাদের এখানে আসতে পারবে???? এই
মাত্র আমি বাড়িতে আসলাম।
..কী বলছ কি তুমি??
..হ্যাঁ, আমি আসছি। তুমি তাড়াতাড়ি এসো।
..ওকে, আমি আসছি। বাইইইইইইই
.
বেস কিছু সময় পরে নীলয়ের আগমণ ঘটে নিশুর
বাসাতে। নিশু ভেবেছিল নীলয় হয়তো এই পথ
দিয়েই অাসবে। তাই সে এই পথের পানে চেয়ে
ওর জন্য ওয়েট করছিল। কিন্তু না, নীলয় অন্য পথ
অবলোপ করে এসেছে। এক মূহুর্তে নিশুর
সামনে এসে নীলয় হাজির হয়। তা দেখে নিশুর
মনে ভীষণ খুশিখুশি অনুভূত হয়।
.
___________________________
.
নীলয় রাস্তায় এসে দাঁড়িয়ে অাছে। আর অপর
দিকে নিশু হঠাৎ নীলয়কে দেখে কিছুটা হতবম্ভ
হয়ে গেল। আর মিঁটি মিঁটি করে হাসতে থাকলো।
নিশুর অনেকক্ষণ হাঁসির পরে নীলয়ই তাকে সেই
হাঁসির জগত থেকে বাস্তবের জগতে ফেরত
অানে।। বলে,,,,,,
.
..তুমি বলে অাসবে না? তবে আমাকে কেন মিথ্যা
কথা বল্লে? অামাকে কেন আগে বলনি যে, তুমি
আসবে ?(নীলয়)
.............(স্টপ)
কোন কথা নাই নিশুর মুখে, হেঁসেই যাচ্ছিল ৩২ টা
ননা মাজা চক চকে দাঁত বের করে________
..কি হল কথা বলতেছ না কিনু??
..আমি জানি না, তোমায় সারপ্রাইজ দিব বলে।
.
বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা প্রবলেম বলে নিশু নীলয়কে
বাসার ভেতরে নিয়ে যায়। অাপ্যায়নের পর্ব শেষ
করে কিছু কথা বলে বাসাতে ফিরে অাসে নীলয়।
বিকাল পেরিয়ে সন্ধার পর রাঁতে দুজনের কথা হতে
থাকে চ্যাটিং এ। তারপর আবারো শুরু হল তাদের
ভালবাসার টক।
.
বাসার বাইরে নীলয়ের সঙ্গে নিশুর অনেক বার ই
দেখা হয়েছে কিন্তু কেউ কারোর সঙ্গে কথা
বলতে পারেনি।
শুধু চোখাচোখি ইশারা আর বর্তমান যুগের
সোশ্যাল মাধ্যম ফেসবুকের চ্যাটিং এ অালাপুন। বেস
কয়টা দিন গত হতে থাকলো এমনটা করে করে।
.
নীলয় একটা নন গভমেন্ট অফিসে চাকরি করে।
ছুটিতে বেস কিছুদিন বাসাতে কাটাবার ফলে অফিস
খোলার দিনটাও ঘনিয়ে অাসতে থাকল। নীলয়ের
অাবার ফিরে যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে।
নীলয়কে যেতে হবে কিন্তু নিশু কিছুতেই
যেতে রাজি হচ্ছিল না তাকে একলা রেখে।
অনেক কান্না কাটি করে নিশু। নীলয়ের অনেক
বোঝানোর পরে এক মূহুর্তে নিশু তাকে
যেতে দিতে বাদ্ধ হয়। নিশু কিছুতেই মেনে
নিতে পারেনি। শত কষ্ট কুকে চাপা রেখে
নীলয়কে হাঁসির সহীত বিদায় দিয়ে দিল।
.
নিশুর অনেক বেশি রাগ হল নীলয়ের উপর। কারন,
নীলয় চলে যাবার সময় একবারো নিশুকে বলে
যায়নি। আর দেখাতো দূরে থাক। অনেক সময় পার
হয়ে গেল নীলয়ের কোন খবর নাই। কেমন
করে পৌছুলো, কি দে কি কিছুই জানতে পারছেনা
নিশু। অনেক কষ্ট পাচ্ছিল সে।(ভালবাসার অনুভূতি
মনে হয় এমনি।)
.
অনেকবার ফোন দেওয়ার গরেও অপর পাশেরটা
থেকে বন্ধে কথা বলে। ট্রাই করতে করতে
সফলতা মিল্লে গেল রাত ৮টা। সারাটা দিন পর এখনেই
একটু ভালতা কাজ করছিল, নীলয়ের ফোন খোলা
পেয়ে। নিশু বুক ভরা অনেক অাশা নিয়ে নীলয়কে
বারবার ফোন দেয় কিন্তু নীলয় ফোন রিসিভ
করে না। কিছু সময় পরে নিশুর ফোনে একটা
ছোট্ট করে টেক্সট অাসল নীলয়ের নাম্বার
থেকে। *****^বিজি আছি এখনে অনেক^*****।
.
তা দেকে নিশু অনেক কষ্ট পায়। নিজেকে
অনেক কষ্টে কনট্রলে অানতে বৃথা চেষ্টা
করেই যাচ্ছিল। ফলে আনতে একটু সময় বেশি
লেগেছিল। এরপরে নিশু আর নীলয়কে ফোন
দেয়নি।
.
এভাবে ই চলতে থাকে দুজনের পথ। নিশুর প্রথম
ভালবাসা তা ও অাবার এমনটা হবে ভাবতেই পারেনি
সে। অনেক কষ্ট বুকে নিয়ে হাঁসিমুখে থাকার
অাপ্রান চেষ্টা করে সে। কারন, মাত্র আর কয়েকটা
দিন পরে নিশুর ফাইনাল পরিক্ষা শুরু হবে। তাই সবকিছু
ভুলে সে আগের মত পড়াতে মনোযোগ দিল।
কিন্তু অবুঝ মনটা ত যে মানতে চাইনা।
.
সবকিছু ভুলে নিশু আবার নীলয়কে ফোনে ট্রাই
করে কিন্তু নীলয় নামের ছেলেটা ফোন রিসিভ
করে না। এভাবে অনেকবার ট্রায়িংএর পরেও ফোন
রিসিভ করেনা। ৫-৬ বারের মাথায় নীলয় রিসিভ করে
বলে অামি বিজি অাছি। এখনে কথা বলতে পারব না।
"ততক্ষনাত " নিশুকে কোন কথা বলার সুযোগ না
দিয়েই আবার ফোনটা কেটে দেয় নীলয়। নিশু
কোন ক্রমেই ভাবতে পারেনি যে, সে ওর
সাথে এমনটা করবে। এভাবে নিশু অনেকটা রাগান্বিত
হয়েগেল সাথে একহ্রাস অভিমানীও।
.
সেদিন রাতে নিশু ফেইসবুকে যাওয়ার কিছু সময় পর
নীলয় তাকে ইনবক্স করে। অনেক কথার
মেসেজ করে কিন্তু নিশু কোন রিপ্লাই দিচ্ছে না।
শুধু সিন করেই রেখে দিচ্ছে। আর নীলয়
এদিকে একের পর এক বিভিন্ন কথা লিখে নিশুকে
ইনবক্স করছে। সেগুলা পড়ে পড়ে নিশুর নিস্পাপ
মনটা পুরা মোমের ন্যায় গলে গেল। নিশু ও বলে
কেন তুমি আমার সঙ্গে এই কটা দিন এমনটা করলে।
কেন?????
নীলয় বিভিন্ন কথার ভঙ্গী দিয়ে নিশুর কাছে ক্ষমা
প্রার্থনা করছিল। কথার কোন এক পর্যায়ে নিশু
নীলয়কে মাফ করে দেয় তার ভুলের জন্য।
এরপরে সেই আবার আগের মত শুরু হয়ে যায়
তাদের কথা-বার্তা, হাসি-তামাসা।
.
কদিন ভাল চলছিল তাদের রিলেশানটা। নিশুর রাগ করা
তাপমাত্রার গ্রেডটা একটু বেশি পরিমানের থাকার
কারণে কিন্চিত কথাতেই কাম সারা হয়ে যায়। তাই ত
নীলয় দুষ্টামি করে সামান্য একটু ত্যারা কথা কৈলেই
নিশু রেগে যেত আর ____ভ্যাঁয়্য্য্য্য। ভ্যাঁয়্য্য।
ভ্যাঁয়্য্য্য্য। ভ্যাঁয়্য্য্য্য্য্য্য্য্য্য্য্য্য্য্য্য্য্য্য্
য্য্য্য্য্য্য্য্য্য,,,,,,,,,(মেয়েলি ফ্যাক্ট) আর কি
.
কিন্তু নিলয়ের এই কথাতে নিশু আজ বেশিই রেগে
গেছে। অন্যদিনের থেকে নীলয় আজ বেশি
রাগিয়ে দিয়েছিল নিশুকে। তাই দুজনের মধ্যে
অনেকটা খারাপ কথা হয়, আবার ভুল বোঝা বুঝির ও
হয়। ফলে নীলয় নিশুর সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার
করে ফেলে। নিশু তখনে ভীষন রেগে যায়।
রাগের মাথায় নিশু বলে দিয়েছিল তুমি অর কক্ষনো
আমার সঙ্গে কোন যোগাযোগেরর ব্যবস্থা
করবে না। আজকের পর থেকে আর কোন
দিনও অামাকে কোথাও খুজে পাবেনা। চিরদিনের
মত আমি হারিয়ে ফেলব আমাকে!!!
ভালো থেকোওও
.
___________________________
.
চিরদিনের মত হাঁরিয়ে ফেলবে আমাকে। যদি
কোনো দিনও আমার সাথে পবিত্র সমপর্ক করতে
পার, সেদিন কথা হবে এর আগে না। এই কথাটা বলার
পর নিশু ফেসবুক লগ আউট করে বেরিয়ে আসে।
এর পর নিশু আর নীলয়ের সঙ্গে কোন
যোগাযোগ রাখেনি। ইনফ্যাক্ট নিশু তার আইডি নামটা
চেন্জ করে ফেলে।
.
এরি মাঝে চলতে থাকে নিশুর এ্যানুয়াল এক্সাম।
অনেক কস্টে সব দুঃখকে বুকে ধারণ করে
পরিক্ষা দিতে থাকে সে। নিশু তখন ফেসবুকে
যেত খুবিই কম আর গেলেও কারো সঙ্গে কথা
বলে না।সে সারাক্ষণই নীলয়ের সঙ্গে করা
মেসেজিং নিয়ে পড়ে থাকতো। প্রতিটা রাঁতে সে
নীলয়ের জন্য কাঁন্না করতো তবে সেটা
কাওকে না জানিয়ে একলা অন্ধকার রাঁতে ঘরের
একটা কোনে বসে।
.
নীলয় যানেনা যে, নিশু তাকে কতটা ভালবাসে।
কারন, নীলয় তাকে আগে কখনো সেভাবে
দেখেনি। সে তার কিছু স্বার্থ উদ্ঘাটনের জন্য
প্রতিনিয়ত নিশুর সঙ্গে মিথ্যা অভিনয় করত। কিন্তু নিশু
আগে কখনো বুঝতে পারিনি। এর ফাকে নিশুর
ফেসবুক আইডিটাও নষ্ট হয়ে যায়। নিশু সেদিন
অনেক কষ্ট পেয়েছিল কারণ তার এবং নীলয়ের
বেস কিছু স্মৃতি ছিল সেখানে।
.
কিছুদিন পর নিশুর ভেতর কেমন জানি আলাদা এক অন্য
রকম ভাব পরিবর্তন আসে। নিশু কারো সাথে কথা
বলে না প্রয়োজন ছাড়া। ঘর থেকে কোথাও
বের হতোনা। সারাটা দিন একা একা ঘরে বসেই দিন
গত করত আর ফেলে আসা নীলয় আর তার
মধ্যেকার কাটানো সব কিছু ভেবে দু চোখের
কোনে জমে থাকা হালকা গরম নোনা জল বৃষ্টিধারার
মত অঝর ধারায় ঝরাতে থাকতো। নিশুর মুখে শুধু
একটাই কথা ""তোমার জন্য কাঁদে মন""।
.
এভাবে চলতে থাকতে লাগল নিশুর কষ্ট ভরা
জীবনের দিনগুলি।
.
অনেকটা দিন পার হয়ে গেল কিন্তু নীলয়ের
আজো পর্যন্ত কোন খবর পালনা নিশু। নীলয়
এখন আর নিশুর কোন খোজ খবর রাখত না। একদিন
নিশু খাওয়া দাওয়া সব কিছু ছেড়ে দেওয়ার ফলে
ভীষন অসুস্থ হয়ে পড়ল। নিশুর একটা বড় সমস্যা
ছিল যা একমাত্র নিশু ছাড়া আর কেউ যানতো না ব্যাপারটা
এমনকি তার মা-বাবা ও নীলয় পর্যন্তও না।
.
আজ ৩ মাস হয়ে গেল নীলয়ের সঙ্গে নিশুর
কোন যোগাযোগ নাই। আর নিশুও অভীমান করে
নীলয়ের সাথে কোন কন্টাক্ট করেনি।
এভাবো আর কয়েকটা দিন পার হয়ে গেল। প্রায় ৪
মাসের মাথায় নিশুকে একটা হস্পিটালের বেডে
আবিষ্কার করা হল। নিশুকে কেমন জানি অদ্ভুতদর্শন
হয়। চেনাই বড় দায়। না খেতে খেতে মেয়েটা
কেমন জানি শুকিয়ে চিকনাই গেছে। ©
.
সব কিছুর পর ডাক্তার টেস্ট করাতে দিলে যা ধরা
পড়লো তাতে নিশু আর তার পরিবার শোনার জন্য
একটুও রাজি ছিলনা। নিশুর টেস্টিং রিপর্ট দেখে ডাক্তার
যা বলল সেটা সে আড়াল থেকে সব শুনতে পায়।
নিশু আর বেশি দিন বাঁচবে না। নিশু খুব বড় জোড়
হলে আর ৩,,৪ মাসের অতিথি এই পৃথিবীতে। চির
দিনের মত চলে যাবে সে না ফেরার দেশে।
.
হ্যাঁ নিশু চলে যাবে, আর বেশিদিন রবেনা এই
মায়াময়ী ঘেরা অাজোব দুনিয়াতে। নিশুর আজ মরণ
ব্যাধি ক্যানসার ধরা পড়েছে।
যেটির সু-চিকিৎসা আজ পর্যন্তও কেউ কখন পাইনি।
সেদিন নীলয়ের কথা বেস মনে পড়ছিল।
অনেক বেশি কথা বলতে ইচ্ছা হচ্ছিল তার। কিন্তু
মনে পড়লেও সেদিন কিছুই করার ছিলনা তার।
.
একদিন জানালার পাশে বসে নীলয়ের সঙ্গে
কাটানো মূহুর্তগুলোর কথা ভাবতেই নিশুর দুইটা
চোখের কোনে হালকা গরম নোনা পানি
বেরিয়ে গেল। অনেক চিন্তা ভাবনা করার পর
নীলয়কে ফোন দেওয়ার আগ মূহুর্তে ভাবে
নীলয় কি আজ আমার দেওয়া ফোনটা রিসিভ করবে
নাকি করবে না?? ভীষন চিন্তিত হয়ে পড়ল।
ভাবল নীলয় হয়ত আজ অন্য কাউকে নিয়ে অনেক
সুখি আছে।
.
তারপর সব ভাবনা বাদ দিয়ে নীলয়কে ফোন দেয়
কিন্তু অপর প্রান্ত থেকে কিছু সময় পর একটা
মেয়েলি শুরে ভেষে এলো ""আপনার কাঙ্ক্ষিত
নাম্বারটিতে এই মূহুর্তে সংযোগ দেওয়া সম্ভব
হচ্ছে না। কিছুক্ষণ পর আবার ডায়াল করুন?? ধন্যবাদ""
এভাবে অনেকবার ট্রায় করার পর কোন ফল পাওয়া
গেলনা। কোন উপায় খুজে না পেয়ে নিশু
নীলয়কে ছোট্ট করে একটা মেসেজ দিল,,,,,,
.
★""জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প,
যা কিছু দেখার নাও দেখে নাও,
যা কিছু বলার নাও বলে নাও।
পাবেনা সময় আর হয়তো!!!!!"""
.
(এইটা গানের কিছু কথা। তবুও অনেক কাজে লাগে।)
.
তোমার সাথে কথা কলতে খুব ইচ্ছে করছিল।
কিন্তু সেটা আর হল না। বলেছিলামনা
তোমায়___________
তোমার থেকে হারিয়ে যাব আর কোনদিন ও
খুঁজে পাবেনা আমাকে। আজ সত্যিই আমি অনেক
অনেক দুরে চলে যাচ্ছি। ★
.
লিখাগুলা লিখতে খুবি কষ্ট হচ্ছিল নিশুর। চোখ দুটো
কেমন ঝাঁপসা হয়ে যাচ্ছিল। তবুও কস্ট করে লেখাটা
সেন্ড করে নীলয়কে।
.
.
আজ প্রায় ৪ মাস পর নিশু প্রকৃতির আসল সৌন্দর্য, পাখির
কলরব ধ্বনি,নদীর উত্থাল পাতাল ঢেউ দেখছে।
কিন্তু আজ এগুলো নিশুর কেমন অসহ্য মনে হয়।
কিছুই ভাল লাগেনা তার। কারণ, সে যে আর কয়েকটা
দিনের অতিথি মাত্র। তার পরেও সব কিছু ছেড়ে তার
প্রিয় মানুষদের ছেড়ে চলে যেতে হবে।
নিশুর আজ চিৎকার করে বলতে মন চাইছে
>>নীলয় আমি তোমাকে ভালবাসি<< যে ভালবাসা
তোমার আমার ভেতর কোন দিনও শেষ হবার নয়।
.
কথাটা ভবতেই নিশু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। সেই
অসুখ, ক্যানসার । দ্রুত ভাবে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়
হস্পিটালে। বেডে শুইয়ে রাখা হয়েছে তাকে।
পাশে দাঁড়িয়ে আছে ডাক্তার। কি জানি চেক করল।
কিছুক্ষণ পর একটা হতাশার ভাব নিয়ে বাইরে থাকা
সবাইকে বল্ল নিশু আর বেঁচে নাই।। নিশু মারা
গেছে। সবাই নশুর নিথর দেহ টা কে নিয়ে কান্না
জুড়ে দেয়। যে কান্না নিশুর কানে যায় না।
আজ আর নিশু আমাদের মাঝে নেই। চলে গেছে
সব কিছুর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে।
চলে গেছে এক অভিমানী মেয়ে অভিমান করে
আঁকাশের তারা হতে।
ছেড়ে চলে গেছে তার ভালোবাসার মানুষ
নীলয়কে ছেড়ে। যাকে সে খুব ভালোবাসত।
আজ ও নিশু নিজেকে শান্তি দিতে পারে নি। তার
অপূর্ন ইচ্ছা পূর্ন করতে নিধি এই পৃথিবীর বুকে
নীলয়ের আসে পাশে ঘুরে বেরাচ্ছে আর
বলছে তোমার জন্য
কাঁদে মন
→[mim]
τηε ενδ

1 comment: