Tuesday, 31 January 2017

আমার CloseUp কাছে আসার গল্প

শীতের সকালে কুত্তার ডাকে কম্বলের তলে ঘুম ভাংলো। কম্বল সরালাম।কতক্ষন বিসানায় বসে বসে ঝিমালাম। আধাঘন্টা পর আড়মোড়া ভেঙ্গে চোখ কচলাতে কচলাতে মশারীর ভিতর থেকে বাহির হলাম। বাধা আসলো, রুম থেকে বের হতে যাব কম্পিউটার টেবিলে উষ্ঠা খেলাম, কিন্তু দমে যাই নি। বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে গেলাম সামনের দিকে।
.
রুমের দড়জা খুল্লাম। বেসিনের কাছে গেলাম কিন্তু তাকে খুঁজে পাইনি। বাথরুমের দিকে গেলাম, বাথরুমের দড়জা লক!! বুয়া ভিতরে কাপড় ধুচ্ছে। বাধা আসছে, কিন্তু দমে যাই নি। আম্মার রুমের বাথরুমের দিকে গেলাম। সেটাও লক!! বারান্দা থেকে আম্মার চিৎকার “ঐ এই বাথরুমে এখন যাবি না, হারপিক দিয়া রাখছি”
.
বুঝলাম ভিলেন এন্ট্রি নিয়ে ফেলেছে। তাও আমি দমে যাওয়ার পাত্র না। কিছু একটা আমাকে করতেই হবে। শেষ বাথরুম মানে বোনের রুমের বাথরুমের দিকে গেলাম। বাথরুমে দড়জা খোলার আগেই বোনের চিৎকার “ঐ আমার ওয়াশড়ুমে যাবা না”
“ওয়াশড়ুমে না, বাথরুমে যাই”
- ‘ঐ হইলো, এটা মেয়েদের বাথরুমে squint emoticon ’
“বাথরুমের আবার মাইয়া পোলা ভার্সন আছে নি?? লেডিজ-জেন্টস টয়লেট আলাদা থাকে তো পাব্লিক টয়লেটে, ঘরের ভিত্রে আবার মাইয়া/পোলার বাথরুম কি জিনিস!!”
.
ডাইনিং রুম থেকে কাজের বুয়ার ডাক আসলো, “ভাইয়া যান, কাপড় ধোয়া শেষ, বাথরুম খালি”
জীবনে চলার পথে এমন কিছু কিছু মহিয়সী মানুষ পাওয়া যায়, যারা আমার মনের খবর বুঝে কিন্তু নিজের রক্তের সম্পর্কের ঘরের মানুষ বুঝতে চেষ্টা করে না। খালা তোমাকে হাজার সালাম।
অতঃপর বোনের প্যাচা মার্কা খোমা উপেক্ষা করে বীরদর্পে এগিয়ে গেলাম বাথরুমের দিকে।
.
বেসিনের উপর থেকে ব্রাশ নিয়ে পেস্ট লাগালাম ব্রাশে। বেসিনের কল খুলে একটু পানি দিতে গেলাম ব্রাশে কিন্তু পেস্ট সব বেসিনে পড়ে গেলো!!
এক জীবনের এক সকালে আর কত বাধা সহ্য হয় বলেন। আমিও তো মানুষ। আমারো তো নিজের মত করে কিছু পাওয়ার অধিকার আছে। বেকার বলে তাকে পাবো না এটা তো হতে পারে না।
.
মেজাজ গেলো খারাপ হয়ে। এক থাপ্পর দিয়ে বেসিনের উপরের রেকে যা ছিল সব ফেলে দিলাম, শুধু রেকে রয়ে গেলো পেস্টের টিউবটি।
আমি জানতাম যত ঝড় আসুক সবাই আমাকে ছেড়ে গেলেও সে আমাকে কখনোই ফেলে যাবে না।
.
আওয়াজ শুনে আম্মা আসলো। নিজ হাতে ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে আমার হাতে তুলে দিয়ে বলল “বোকা ছেলে, এটার জন্য এত মাথা গরম করলে হয়”
অতঃপর আমি দাঁত মাজলাম, মুখ ধুলাম। নিজের কাছে ফ্রেস ফ্রেস লাগছিলো।
.
সকাল সকাল এই ফ্রেস লাগাটা সম্ভব হতো না যদি Close Up পেস্ট টি আমাকে ছেড়ে বাথরুমের কমডে পড়ে যেত।
এই ছিলো আমাদের Close-Up কাছে আসার সাহসী গল্প squint emoticon
.
(বিঃদ্রঃ দাঁত মাজার পেস্টের লগে ভ্যালেন্টাইস ডে স্পেশাল প্রেম পিরিতের কিচ্ছার কি সম্পর্ক আমার মাথা ধরে না colonthree emoticon )

Close up কাছে আসার গল্প।

আবারো শুরু হতে যাচ্ছে ক্লোজ আপ কাছে আসার গল্পঃ
তো সেইবার একখান close up টুথপেষ্ট কিনলাম ...
তো প্যাকেটের মধ্যে লেখা
প্রতি সপ্তাহে ১২ জন samsung জিতুন
শুধুমাত্র একটা মিস কল দিয়ে প্যাকেটের গাঁয়ের কোড দিন
.
তো সিষ্টেম মত মিস দিয়ে ওয়েট করলাম
একটু পরেই ওই নাম্ভার থেকে ফোন দিল
.
- হ্যালো স্যার আমাদের ক্যাম্পেইনে
জয়েন করার জন্য ধন্যবাদ
আপনার প্যাকেটের উপরের কোড দিন
(তো কোড দিলাম)
.
- ধন্যবাদ স্যার এখন আপনার প্রশ্নের উত্তর দিন !
.
- Close up কিভাবে আপনার ভালবাসার
মানুষকে পাশে আনে.?
বিপ শোনার পর উত্তর দিন
.
(আমি সাথে সাথে কোমরে গামছা বেঁধে উত্তর
দেওয়ার জন্য তৈরী হয়ে গেলাম)
.
বিফ শেষ আমার উত্তর শুরু
.
- অসলে হৈছে কি আমি এমন একটা লোক যে
কয়েক বছর ধরে দাঁত মাজত না
কিন্তু, কিভাবে যে আমার একখান প্রেম হয়ে গেল :v
.
তো প্রেমিকার সাথে আমার কি ভাব
তো আমি একদিন জোর করি হেতিরে lip kissing
করে দিলাম.. হেতি তো খাড়াত বমি করে দিল
যাহ কেল্লা ফতে. ভালুবাসা শেষ
হেতি চলিয়া গেল :'(
.
হেতিরে ফেরানোর জন্য আমি বহুত পেষ্ট
ব্যবহার করলাম ...
কোন কাজ অ্য না
তো শেষ ম্যাষ ম্যাজিক মফিজের কাছে গেলাম
ও বুদ্বি দিল close up ব্যবহার কর
সাউন্ড বক্সের জোর বাড়বে মুখের গন্ধ ও দূর হৈইবে
.
সাথে সাথে close up কিনলাম
দুইটা লেবার নিয়ে দাঁতে ঘষা মাজা শুরু করে দিলাম
আহ গন্ধ তো নাই আর দাঁত ও কি ফকফকা
.
তো বুকে বল নিয়ে হেতির কাছে গিয়েই lip kissing শুরু
আহ কেল্লা ফতে ...হেতিও খুশি...আমিও খুশি
হেতি আবার ফিরে আসছে ..
আমাকে আই ল্যা বু কৈইছে :v
.
এইভাবে ক্লুজ আপ দিয়ে দাঁত মেজে আমি
হেতিরে বশে আনলাম হে হে হে
.
হ্যালো.. হ্যালো কি কেমন লাগল ম্যেডাম
হায় হায় ম্যেডাম দেহি কথা কয় না
আমি নিশ্চিত হেতি সেন্সলেস হয়ে গেছে
আর তা না হলে আমার প্রেমে পড়ছে
... :v

Wednesday, 25 January 2017

facebook.com/shakil730
মেয়েটির আজ বিয়ে।
ছেলেটি গভীর যমুনা নদীর পাড়ে দাড়িয়ে
আছে।
মেয়েটি একটা বিয়ের কার্ড ছেলেটির
হাতে দিয়ে বলছে দাওয়াত রইলো তোর।
আমি তো তোর বউ হওয়ার যোগ্য না। তাই
অন্যের ঘরে যাচ্ছি।
তুইও একটা রাজরানী কে বিয়ে করে সুখে
থাকিস।
মেয়েটা চলে যাচ্ছে...
ছেলেটি বলছে দাড়া...
এই নে তোর বিয়ের গিফট। বিয়ের পর
স্বামীর বাড়িতে গিয়ে দেখিস গিফট টা।
মেয়েটি হাত বাড়িয়ে নিয়ে দেখে তার
বিয়ের কার্ডের মতোই একটা কার্ড।
মেয়েটি ছেলেটিকে বললো তোর ও বিয়ে
ঠিক হলো নাকি?
ছেলেটি বললো ঐ চিঠিটা খুললেই বুঝবি।
তবে বিয়ের আগে খুলিস না প্লিজ...
***
মেয়েটা বিয়ের পর স্বামীর বাড়ি গেছে।
বাসর ঘরে স্বামী বউকে বলে একটু বাইরে
গেছে ৩০ মিনিটের জন্য।
মেয়েটি ছেলেটির চিঠিটা খুলে পড়ছে...
....
পাগলী...
ভালো ও সুখে থাকিস তুই।
তোর হতে পারবো না জেনেই তোকে না
বলেছি। আমার ভিতরের সবই নষ্ট। বাঁচবো আর
কয়েকদিন। কিন্তু তুই পরের ঘরে যাবি শুনেই
কেমন জানি মনে হলো এই কটা দিন ও বাঁচা
ঠিক হবে না। তাই চিঠিটা নিয়ে যমুনার
ধারে দাড়িয়ে ছিলাম। জানতাম তুই আসবি।
চিঠিটা নিয়ে তুই যাবার পরই গভীর স্রোতময়
নদীর বুকে ঝাপ দিয়ে চলে গেলাম তোর
থেকে বহুদূরে।
ক্ষমা করে দিস রে পাগলী....
....তোর..... #পাগল

Tuesday, 24 January 2017

তোমাকে ঠিক চেয়ে নেব

১ . খুব মেঘ করে বৃষ্টি নামার আগে রাতের আকাশ যখন অফুরন্ত উল্লাসে নিজেকে লালচে রঙ্গে সাজায়, তখন মাঝেমাঝে আমার মনে অদ্ভুত একটি ইচ্ছে জেগে উঠে । বোকা বোকা একটি ইচ্ছে , কিন্তু আমার কাছে এই ইচ্ছেটি ভীষণ প্রিয় । রাতের মেঘলা আকাশ দেখলে আমার কেন যেন নির্জন একটি দ্বীপ কিনে ফেলতে ইচ্ছে করে । ইচ্ছেমত সবুজ আর নীলচে রঙ করা সেই দ্বীপটিতে শুধু আমার একলা রাজত্ব হবে । আমার অনেকদিনের ইচ্ছে , মাঝরাতের আকাশ ভেঙ্গে সেখানে যখন ঝুম বৃষ্টি নামবে , সেই বৃষ্টিতে আমি তখন দুরন্ত নদীর মত উল্লাসে মেতে উঠব । সেই বৃষ্টির আনন্দ থেকে বঞ্চিত করবার জন্যে কোন শাসনের জাল আমাকে বাঁধতে আসবেনা । আমার একলা দ্বীপে কেবল আমার মুগ্ধতায় মাখা বৃষ্টি বিলাস হবে । আর আমার সামনে থাকা ছোট্ট সমুদ্রতটে অবিরাম দুলতে থাকবে রঙ্গিন কোন পানসি , হতে পারে সেটি অনেক দুরের কোন দ্বীপাঞ্চল থেকে ভেসে এসেছে , হতে পারে সেটি কোন খেয়ালি রাজপুত্রের বিলাসী ভ্রমণসঙ্গী । হয়ত সেই পানসিতে উদাস নয়নে বসে থাকবে সেই ভীষণ সাহসী বৃষ্টিমুগ্ধ রাজপুত্র । আর উন্মত্ত বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থেকে আমি দেখব সেই রাজপুত্রের চুলের সাথে বাতাসের যুদ্ধ , বৃষ্টির ছিটেতে ঝাপসা হয়ে যাওয়া তার চশমার কাঁচ । এই যা ! কি ভাবছি , রাজপুত্ররা বুঝি চশমা পরে ? আছে কোন রাজার পুত্র যে কিনা চোখে কম দেখে বলে চশমা পরত ? কি জানি !

নিজের অজান্তেই হেসে ফেললাম । আমার ভাবনা গুলি এত বাউন্ডুলে কেন হয় কে জানে ? ফুটপাথের উপর ধীর পা ফেলে এই ভরসন্ধ্যাবেলায় যখন আমি ডাক্তারের কাছে যাচ্ছি , তখন আমার এই অদ্ভুত কল্পনাবিলাসীতার কি কোন কারন থাকা উচিত ? না আকাশে কোন মেঘ আছে , না আছে ঝড়ো হাওয়া । তবে কেন যেন মনে হচ্ছে আজ রাতে বৃষ্টি নামবে , শরৎকাল তো সারপ্রাইজ দিতে ভীষণ পছন্দ করে বলেই জানি । হঠাত লক্ষ্য করলাম , একা একা হাসছি বলে কয়েকজন পথচারি ঘুরে আমার দিকে তাকাচ্ছে , সম্ভবত পাগল ঠাওরেছে আমাকে । সে যাকগে ,যার যা ভাবার তাই ভাবুক । কে কি ভাবল তা নিয়ে ইরা কিন্তু মাথা ঘামায় খুব কম সময়েই , হুম ।

ক্লিনিকটা ছোটখাট , ব্যক্তিমালিকানাধীন । আমাদের ছোট্ট এলাকার মানুষদের ভরসার স্থান । আর আমার মত রোগাপটকা হলে তো কথাই নেই , এই দুইমাসে আমি তৃতীয়বারের মত এখানে হানা দিলাম । এবারের এক্সকিউজ - কি বলা যায় ? আমি দুদিন হল আমার নাকের অস্তিত্ত টের পাচ্ছিনা , বাজে টাইপের বিচ্ছিরি লেভেলের সর্দিতে আমার নাক সম্ভবত বিলীন হয়ে গেছে । এই সমস্যাটি কিন্তু নতুন নয় , দুইমাস পরপরই আমার এই অবস্থা হয় । তবে সমস্যায় পড়তে হয় রুমাল খুঁজে পাওয়া নিয়ে । এত রুমাল কোথায় আর পাব ? বাসার মানুষজনের যাবতীয় পুরানো আধপুরানো জামাকাপড় আমার জন্যে বিশেষভাবে সংরক্ষন করা হয় । আমি এদের সদ্গতি করি নাকি দুর্গতি করি তা ঠিক জানিনা , তবে আমার সর্দি সমস্যার যে একটা গতি হয় তা কিন্তু সত্যি ।

এক ঘন্টা অপেক্ষার পর আমার সিরিয়াল যখন আসল , আমি তখন ঠিক '' পাইছিরে " টাইপের ইমোতে ছিলাম । কিন্তু আমি দরজা খুলে ঢুকবার পরই আমার দিকে তাকিয়ে ডাক্তারের ১০০ ওয়াট বাল্বের মত চেহারা ২৫ ওয়াট বাল্বের মত হয়ে গেল । আমি এখানে এত বেশি হানা দেই যে ডাক্তার থেকে শুরু করে কম্পাউন্ডার পর্যন্ত সবাই আমার চেনা হয়ে গেছে ,এই ডাক্তার তো আরো এক কাঠি উপরে । ফিচলা হাসি হেসে ডাক্তার সাহেব বললেন ,'' কি খবর তোমার ? আবার রোগ বাঁধিয়েছ ? তুমি বরং কাঁথা বালিশ নিয়ে হসপিটালে এসে পড় , তোমার ইন্টেন্সিভ কেয়ার প্রয়োজন ।'' আমি কি বলব বুঝলাম না , সত্যি বলতে কি , এই ডাক্তারের মত বেয়াদব কিসিমের ডাক্তার আমি আমার জীবনে খুব কম দেখেছি । আরে বেটা আমার অসুখ হলে আপনার কী ? আপনার তো অসুখি হবার কারন নেই , আপনার আরো টু পাইস ইনকাম হবে । তাও এত প্যাচালের কি মানে আছে ? আমার পুরো ছোটবেলা অবশ্য কেটেছে এই বেয়াদব ডাক্তারের বাবার চিকিৎসা নিয়ে , তিনি এখনও চিকিৎসা পেশাতেই আছেন , তবে অন্য হাসপাতালে বসেন । নিজের এই ক্লিনিকটাতে বসার আর এখন সময় পান না , কেন যেন বুড়ো বয়সেই ডাক্তার গুলি বিখ্যাত হয়ে যায় । এমন ভাল মানুষ ডাক্তারের ছেলে কিভাবে এমন ফিচলা বেয়াদব হল সেটা একটা ভাববার বিষয় । তবে আপাতত সেটা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে আমি চেয়ারে দুপ করে বসে পড়লাম । মুখ গোমড়া করে সরু নেইমপ্লেটের দিকে তাকিয়ে রইলাম , যেখানে লেখা - ডাঃ ফারাবী আহসান ( হ্যান ত্যান ডিগ্রি ) ।

'' এবার বল দেখি কি হয়েছে ?'' আমি খ্যাসখ্যাসে গলায় বললাম ,'' সর্দি জ্বর , গলাব্যাথা , দম নিতে পারিনা ।'' আমার দিকে কয়েক মুহূর্ত তাকিয়ে বলল , '' তোমাকে ওষুধ হিসেবে আইসক্রিম দিয়ে দেই ?'' মেজাজ বয়েলিং পয়েন্টে উঠে গেল , কিন্তু গলা ব্যথার কারনে কিছু বললাম না । '' ইরা ,তোমাকে মাঝেমাঝেই আইসক্রিম হাতে রিকশায় দেখা যায় , তাই বললাম । এখন বরং তুমি একটু সোফায় গিয়ে বস ,আর চারটা রুগী আছে , দেখে নেই । তুমি পুরানা রুগি তো , তোমার সাথে একটু আলাপ করব , ঠিক আছে ?'' বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলাম , এতক্ষন ধরে বসে আছি , আরো বসে থাকতে বলে ? কত বড় সাহস , আরে আমার সময় কি আলুখেতে ধরে নাকি ? তারপরেও আমি হতাশার সাথে আবিষ্কার করলাম , রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে আমি ঠিক সোফাতে গিয়েই বসেছি । '' কফি আনাই ?'' আমি কিছুই বললাম না । বেয়াদব ছেলেদের সব কথার উত্তর দিতে নেই , তবে মিনিট পাঁচেক পরে আমাকে ঠিক গরম কফি হাতেই বসে থাকতে দেখা গেল ।

পাঠক কি ভাবছেন ? গরবল কিনা ? জি, ঠিকই ভাবছেন , এভরিথিং ইজ গরবল ।

গরবল টা যখন শুরু হয়েছিল সেটা অনেক অনেক আগের কথা । আমি তখন ক্লাস নাইনে পড়তাম । আজকের ডাঃ ফারাবী তখন মেডিকেল প্রথম বর্ষের ছাত্র । এলাকায় মেয়েদের কাছে তিনি সেই লেভেলের হিট । বিশেষ করে কলেজে পড়ুয়া আপুদের কাছে তো তিনি তখন চোখের মনি । চোখে চশমা লাগিয়ে, হাতে বই, কাঁধে ব্যাগ আর গায়ে সাদা এপ্রন জড়িয়ে তিনি যখন বের হতেন আপুদের চেহারা তখন দেখার মতন হত । আপুরা ফারাবী ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে থাকত আর আমি আপুদের হা করা চেহারার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে স্কুলে যেতাম । আপুরা বায়োলজি বইয়ের ইম্পরট্যান্ট কোশ্চেন দাগাতে প্রায়ই ফারাবী ভাইয়ের শরনাপন্ন হত বলে আমি শুনতাম । এমন কি আমার বান্ধুবিরাও এই ছুতায় তার সাথে কথা বলত । আমাকে নিয়ে যাবার ও অনেক চেষ্টা করা হয়েছে , কিন্তু কথা হল বায়লোজি জিনিসটা আমার কোন কালেও পছন্দ ছিল না । ইম্পরট্যান্ট প্রশ্ন দাগিয়েও আমার লাভ হবেনা সেটা আমি জানতাম এবং যেহেতু সেই '' সো কল্ড '' ফারাবী ভাইয়ের প্রতি আমার কোন দুর্বলতা নেই তাই আমি কখনই আমার বান্ধুবিদের সাথে যাই নি । ফারাবী ভাইদের বিখ্যাত বাসাটা পর্যন্ত আমি সনাক্ত করিনি , শুধু তাদের গলিটা চিনতাম । ফারাবী ভাইয়ের প্রতি আমার এই অনাকাংখার কারন আমার বান্ধুবিরা প্রায়ই বুঝার চেষ্টা করত । আর এই ঝাউলা চুলের ঘুম ঘুম চেহারার আতেল ছেলের দিকে তাকিয়ে এনাদের এত প্রেম কোথা থেকে উৎপত্তি হত, আমি সেটা বুঝার চেষ্টা করতাম ।

কথা হল , আমি যেটা বুঝার চেষ্টা করতাম, দুই বছর পরে হঠাত করেই সেটা একদিন আমি বুঝে গেলাম ।

এস এস সি এক্সাম দিবার পর আমার তখন বিশাল অবসর । এত এত প্ল্যান , এটা করব ,ওটা করব , এখানে যাবো, ওখানে যাবো । কিন্তু '' হিট '' এরোসলের বিজ্ঞাপনের মতই আমার সব প্ল্যান ভেস্তে দিল একটা মশা , এক ডজন মশাও হতে পারে । বেশ কয়েকটা মশা না কামড়ালে আমার ওরকম বিচ্ছিরি জ্বর হবার কথা নয় । আমি আক্রান্ত হলাম ডেঙ্গুজ্বরে । অনেক বেশি দুর্বল হয়েছিলাম আমি , আমার ট্রিটমেন্টের জন্যে আব্বু ফারাবী ভাইয়ের বাবাকে বাসায় নিয়ে এসেছিল । চারদিন স্যালাইন দিতে হয়েছিল , আর সেটাই হল কাল । প্রথম দিন স্যালাইন দেবার সময় আমি দেখলাম , সুপারহিট ফারাবী ভাইয়া আমাদের বাসায় এসেছে তার বাবার কথামত । আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমি থতমত খেয়ে যখন তার দিকে তাকিয়েছিলাম , সে ফিচলা হাসি দিয়ে বলেছিল , '' কি ইরা ? এইটুক একটা মশাই কাত করে দিল ?'' এরপর স্যালাইন লাগাতে লাগাতে একটা প্রান খোলা হাসি । এখন আমি ভাবি , সেদিন সেই হাসি দেখে আমি তো আমি , যেই মেয়ে পাগল হতনা তার হার্ট নির্ঘাত রেইনফোরসড সিমেন্ট দিয়ে বানানো বলে ধরে নেওয়া যেত । অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, ঐ একটা হাসি দেখেই আমার জ্বর অর্ধেক ভাল হয়ে গেল । আমি দুর্বল গলাতেই জবাব দিলাম , '' ওইটুক মশা আপনাকে কামড় দিলে আপনি শুধু কাত না , উপুড় হয়ে যেতেন ।'' আবার সেই হাসি । মানুষ এত সুন্দর করে এরকম বিধ্বংসী হাসি দেয় কেমন করে ? মনে হল, নাহ আর বাচবনা বোধ হয় । আতেল একটা ছেলের হাসি দেখে তাৎক্ষনিক ভাবে পাগল হয়ে গেছি , ভাবা যায়না , কি বাজে অবস্থা !

সিনেমায় দেখতাম, ছেলেরা মেয়েদের হাসি দেখে এভাবে পাগল হয় , কিন্তু একটা মেয়ে হয়ে আমি এমন একটা ফিচলা আতেলের হাসি দেখে এভাবে পাগল হয়ে গেলাম , এইটা কি একটা কথা হল ? এইটা কেন হল ? কিভাবে হল ? এবং অতঃপর কি হবে ? কোনকিছুই আমার জানা ছিল না । আমার শুধু জানা ছিল , আমি শেষ । আমার নীরব পাগলামিতে কেটে গেল অনেকদিন । আমি এসে পড়লাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষে আর তিনি এখন পুরোদস্তুর ডাক্তার সাহেব । ফারাবী ভাই পাঁচ মাস হল এই হসপিটালে বসে । এই পাঁচমাসে আমি লক্ষ্য করেছি অসুখবিসুখের সময় গুলি আমার বড়ই মধুর হয়ে যায় , এমনকি রোদের মাঝে আইসক্রিম খেয়ে জ্বর বাঁধাবার জন্যে আমি কেমন যেন ব্যাকুল হয়ে যাই । বাসায় কারো ডাক্তার দেখাবার দরকার হলে টার্ম ফাইনালের আগের রাতেও আমি ধিংধিং করে তার সাথে হসপিটালে চলে যাই । এভাবে কেউ কারো প্রেমে পড়ে ? '' বাহ বাহ তুমি তো কফিমগ নিয়ে ভাল মডেলিং কর , কিন্তু আমি তো মডেলিং করার জন্যে এটা দিই নাই , তোমার গলার জন্যে দিয়েছি '' ফারাবী ভাইয়ার কথায় বাস্তবে ফিরে আসলাম , বললাম ,'' আমাকে আর কতক্ষণ বসতে হবে ? '' '' এখানে এসে বস '' , সামনের চেয়ারটা দেখিয়ে দিল । আমি সোফা ছেড়ে চেয়ারে আসতেই বলল ,'' কি গরম দেখেছ ? একটা বৃষ্টি হওয়া উচিত কি বল ? কতদিন হয়না ।'' '' কে বলেছে আপনাকে ? গত পরশু মাঝরাতে অসাধারণ একটা বৃষ্টি হয়েছে '' '' তাই নাকি ? আমি তো টের পেলাম না , তুমি মনে হয় স্বপ্নে দেখেছ ।'' '' জি না , আমি কাটায় কাটায় সোয়া এক ঘন্টা ভিজলাম , আর আপনি বলেন আমি স্বপ্নে দেখেছি ?'' বলতে বলতেই দেখলাম , ফারাবী ভাইয়া চোখ সরু করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । এইরে ! আমি কি করলাম ,বৃষ্টিতে ভিজার কথা বলে দিলাম ? আমার জ্বর আর গলা ব্যাথার এটাই যে আসল কারন ! আবার তার পুরানো ট্রিক্সে আমি পা রাখলাম , জিভে একটা কামড় দিয়ে মাথা নিচু করলাম । '' তুমি এসব কেন কর ? হাসপাতালে আসতে খুব মজা ? হাসপাতালে চিকেন ফ্রাই পাওয়া যায় ?'' আমি ফোস করে নিঃশ্বাস ফেললাম । আরে মাথামোটা ডাক্তার , হাসপাতালে ইরা 'কি' পায় আর ' কাকে' পায় সেইটা তুই জীবনেও বুঝবিনা , তাই এখন বকবক না করে চুপ থাক । '' কি কথা বলনা কেন ?'' ফারাবী ভাই একই ভাবে তাকিয়ে আছে । আমি তার মত দৃষ্টি দিয়েই বললাম , '' আপনি জানেন না আমার গলা ব্যথা ? আমার কথা বলতে কষ্ট হয় ?'' '' সেইটা তো ডাক্তারের দোষ না , তুমি মাঝরাতে বৃষ্টিতে ভিজবা আর সর্দি কাশির সোহাগ সহ্য করবানা , তাই কি হয় ?'' আমি বিরক্ত হয়ে চোখ নামালাম , এই মাথামোটার সাথে কথা বলার কোন মানে হয়না ।

প্রেস্ক্রিপশান নিয়ে উঠতে যাবো , তখন মহামান্য বললেন ,'' আচ্ছা তুমি প্রাইভেট পড়াও ?'' মনে মনে বললাম ,তোমারে পড়াব , রোমান্টিজম ,পড়বা ? এমনিতে মাথা নেড়ে বললাম ,'' পড়াই না ।'' '' পড়াবা একজনরে ? একটা মেয়ে ? ক্লাস এইটের ।'' আমি দাঁত বের করে বললাম ,'' আপনার বোন নাকি ?তাইলে পড়াবো ।'' সে চেয়ারে হেলান দিয়ে বলল ,'' আমার বোন সেইটা নিশ্চিত হলে কেমন করে ? গার্লফ্রেন্ডের বোন ও তো হতে পারে ?তাইলে পড়াবা না ?'' আমি লম্বা একটা শ্বাস নিতে গেলাম , কাশি চলে আসল । বেশ কিছুক্ষন পর কাশি থামলে তাকে বললাম ,'' আপনার গার্ল ফ্রেন্ডের বোন কে আমি পড়াব কেন ?'' ফারাবী ভাই মুচকি হেসে বলল ,'' কেন ? ইঞ্জিনিয়ারিং এর পোলাপাইনরা কারো গার্ল ফ্রেন্ডের আত্মীয়স্বজন পড়ায় না নাকি ?'' '' আমি দূরে গিয়ে পড়াব না , বাসায় কেউ রাজি হবেনা ।'' ফারাবী ভাই একটা কাগজে কিছু একটা লিখে আমার দিকে বাড়িয়ে বলল ,'' এই ঠিকানা , আমাদের এরিয়াতেই । পড়াবা না ?'' এই ছেলের মত খারাপ ছেলে দুনিয়াতে দুইটা নাই । প্রেম করে , গার্ল ফ্রেন্ড আছে , সেইটা আমাকে শুনাল আবার শালী কে পড়ানোর অফার ও দিল , কি বাজে অবস্থা - ভাবা যায়না ! আমি আড়চোখে তার দিকে তাকালাম , মাথা জ্বলে যাচ্ছিল আমার , তার চোখের চশমাটা গুঁড়া করে ফেলতে ইচ্ছে হচ্ছিল । কিন্তু সে মুখ করুন করে বলল ,'' প্লিইজ ?'' এরপরেও কি না বলা যায় ? এক মুহূর্ত পর কি যেন ভেবে বলে ফেললাম ,'' ঠিক আছে ।'' সে তার প্রাণখোলা হাসিতে আমাকে ভাসাতে ভাসাতে বলল ,'' কাল বিকেলে গিয়ে তোমার ছাত্রীর সাথে দেখা করে এসো । আমি ওকে বলে দিব ।'' '' ওকে '' বলে বের হয়ে আসলাম । ছেমড়া তোর গার্ল ফ্রেন্ডরে ইরা দেখে নেবে ! বের হওয়ার সময় একজন কম্পাউন্ডার আর দুইজন নার্সের সাথে দেখা হল । প্রত্যেকেই '' ম্যাম ভাল থাকবেন'' '' শরীরের খেয়াল রাখবেন '' ইত্যাদি উপদেশ দিল । আরে আমি একটু আগে ছ্যাকা খেয়ে সুস্থ হয়ে গেছি । আমার গা থেকে কি ছ্যাকা খাওয়া পোড়া গন্ধ আসছে নাকি যে আমাকে '' খেয়াল রাখবেন '' '' ভাল থাকবেন '' এসব শুনাতে হবে ?

আমি দিব্যি আছি । ফারাবী ভাই আমাকে ছ্যাকা দিবে আমি সেটা জানি । কথা হল , আমি ছ্যাকা খেতে পারি ,তাই বলে ব্যাকা হব নাকি ?

২ . যে গলির সামনে দাঁড়িয়ে আছি , সেই গলিতেই ফারাবী ভাইয়াদের বাসা , কোন টা আমি জানিনা , তবে এই গলিতেই । আমি চাইলেই আমার বান্ধুবিদের কাছ থেকে জানতে পারতাম ফারাবী ভাই কোন বাসায় থাকে । কিন্তু আমি চাইনি , কারন আমি চাইনি কেউ জানুক আমি তাকে পাগলামির এবসলিউট পয়েন্টের কাছাকাছি লেভেলের পছন্দ করি । বড় আপুরা তার পিছনে ঘুরতে ঘুরতে বয়ফ্রেন্ড জুটিয়ে ফেলেছেন , কয়েকজনের বিয়েও হয়ে গেছে , আমার বান্ধুবিদের ও একই দশা । বাকি ছিলাম আমি , সবার অগোচরে , হারাধনের এই শেষজন ও গতকাল ছ্যাকা খেয়েছে । ইহা ব্যক্তি যে নিজের বাসার আশেপাশের মেয়ের সাথে প্রেম করবে সেটা কে জানত ? বেটা মাথামোটা , প্রেম যে কর , ছ্যাকা খেয়ে ব্যাকা হয়ে আমার কাছেই তুমি আসবা , এই আমি বলে দিলাম । তোমার সাথে কোন চিজ প্রেম করে সেইটা দেখতেই আমি পড়াতে আসছি ।

মেয়েটার নাম তিহা । দুই ঝুটি করা বাবু বাবু চেহারার মেয়েটাকে প্রথমেই আমার ভাল লেগে গেল । তিহাও আমাকে '' আপু আপু '' করে অস্থির করে দিল । কিন্তু এভাবে ভাল লাগলে তো হবেনা , এরা হল গিয়ে আমার ভিলেন , ভিলেন দের ভাল লাগলে কি হবে ? বাসায় এদিকে ওদিকে যেদিকেই তাকাই সেদিকেই তিহার আম্মাকেই দেখি । মোটাসোটা আন্টি রা যে কিউট টাইপের ভাল সেটা আরেকবার প্রমান হয়ে গেল । টিচার হিসেবে বাসায় এসেছি , পড়ানোর স্কিল সম্পর্কে আন্টি আমাকে কিছুই জিজ্ঞেশ করলেন না । বরং গরম গরম সিঙ্গারা সামনে এনে বললেন ,'' এই মেয়ে , জলদি একটা খেয়ে বল তো কেমন হয়েছে । ভাল হলে আরও কয়টা বানাব ।'' সিঙ্গারা টিঙ্গারা খেয়ে আমি যে ই বলতে যাচ্ছিলাম ,'' আন্টি আমি তো তিহা কে পড়ানোর জন্য আসছিলাম , তা ...... '' আন্টি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বললেন ,'' ফারাবী আমাকে বলেছে । তোমার নাম তো ইরা , তাইনা ?''

চিন্তায় পড়ে গেলাম । মা - মেয়ে যেরকম ভয়ংকর লেভেলের ভাল , তাতে আসল ভিলেন ও যে এদের কাছাকাছিই হবে , সেটা আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম । কিন্তু তাকে তো দেখছিনা । তিহার সাথেই কথা বলছিলাম । চলে আসব তার কিছুক্ষন আগে তিহা বলল , '' জানেন ইরাপু, ফারাবী ভাইয়া না একটা মিথ্যুক ।'' '' তাই ? কেন কেন ?'' '' আমাকে বলেছে , আপনি নাকি ভয়ানক রাগী । কত বড় মিথ্যুক , দেখেন ।'' আমি দম আটকে বললাম ,'' তোমার আপু মনে হয় অনেক শান্তশিষ্ট , তাইনা ?'' '' আপু ?'' '' হুম , কোথায় তোমার আপু ? দেখলাম না তো ।'' '' আমার আপুর কথা জানলেন কিভাবে ?'' '' তোমার ফারাবী ভাই ......'' তিহা আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল ,'' বুঝছি ইরাপু ।'' '' মানে ?'' '' ওনার কথা আর বইলেন না । মিথ্যা কথা বলতে বলতে ঝানু হয়ে গেছে । আমার কোন আপুটাপু নাই ।'' হা হয়ে যাওয়া কাকে বলে , আমার সামনে একটা আয়না থাকলেই আমি প্রাক্টিকালি দেখে ফেলতাম । ফারাবী ভাইকে ব্রাশফায়ার করার ইচ্ছেটাকে অনেক কষ্টে আটকে কোনমতে বললাম , '' তাহলে কয় ভাইবোন তোমরা ?'' '' দুই ভাইবোন । আমি আর ভাইয়া ।ফারাবী ভাইয়া ।'' আমি উঠে দাঁড়ালাম । আমার হাঁসফাঁশ অবস্থা হয়ে গেছে । আমি এই মুহূর্তে এখান থেকে চলে যাওয়াটাকেই ভাল সিদ্ধান্ত বলে বিবেচনা করলাম । কারন এই বাসায় আরও দুই চার মিনিট থাকলে আরও কি কি যে শুনতে হবে সেটা ভেবেই আমি ভীত এবং একই সাথে আতংকিত হয়ে গেলাম !

গলির মাথায় যাবার সময় দেখলাম ফারাবী ভাই পকেটে হাত ঢুকিয়ে সেই রকম ভাব নিয়ে হেটে আসছে । কথা বলব না , কিছুতেই বলব না , হয়ত বলতাম ও না , কিন্তু কেউ ডাকলে কি কথা না বলে থাকা যায় ? ফারাবী ভাই আমার দিকে এগিয়ে এসে বলল , '' তিহার সাথে কথা হয়েছে তোমার ?'' '' হয়েছে ।'' '' পড়াচ্ছ তাহলে ?" আমি নাক কান দিয়ে ধোঁয়া বের করতে করতে বললাম ,'' আপনি এরকম কেন ? তিহা নাকি আপনার গার্ল ফ্রেন্ডের বোন ? আমাকে এভাবে বোকা বানালেন কেন ?'' ফারাবী ভাই গোল গোল চোখে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকল । '' আচ্ছা আমি কিন্তু একবারও বলি নি আসলেই তুমি আমার গার্ল ফ্রেন্ডের বোনকে ...... আচ্ছা ঠিক আছে ধরলাম আমি বলেছি , কিন্তু দেখ আমার বোন মানে আমার তো গার্ল ফ্রেন্ডের ননদ , ননদ আর বোন কি আলাদা ? '' কলার ধরে ঝাঁকাতে ইচ্ছে করছিল খুব । কিন্তু এই ছেলের সাথে কথা বলে আমি আগাতে পারবোনা , তাই বাই বলে চলে আসাটাকেই ফরজ মনে করলাম ।

আর আই পি প্রেম পিরিতি ।

৩ . পিথাগোরাসের বিশাল উপপাদ্যটা বুঝাতে বুঝাতে আমি আবিষ্কার করলাম , তিহার মনটা আজকে বেশ খারাপ । সে পড়ায় মন দিতে পারছে না । খুবই স্বাভাবিক , পড়ায় প্রতিদিন মন বসবে এমন কোন কথা নেই । মনের ও মুড বলে একটা ব্যাপার আছে । আমি পড়া থামিয়ে গালে হাত দিয়ে বললাম , '' উপপাদ্য টা ভীষণ পচা , তাইনা তিহা ? একদম বোরিং ।'' তিহা ফিক করে একটু হাসল । ও আমার কাছে কখনো কিছু লুকায় না । এবারো লুকোল না , মলিন গলায় বলল , '' আপু , মন খারাপ থাকলে ভাল পড়াগুলিও বোরিং হয়ে যায় ।'' কথা সত্য । কেন মন খারাপ সেটা জিজ্ঞেস করাটা ঠিক হবে কিনা ভাবতে ভাবতেই ও বলল , '' আপু জানেন , ভাইয়া না মাদ্রাজ যাচ্ছে আগামী মাসে , কি ডিগ্রি ফিগ্রি নিবে , আমি তো বুঝিনা । ভাইয়ার জন্যে অনেক খারাপ লাগবে আমার । ঝগড়া করলেও তো আমারই ভাইয়া ।তাই পড়াতেও মন দিতে পারছি না । '' কি বলে তিহা ? ফারাবী ভাই মাদ্রাজ কেন যাবে ? এত ডিগ্রি দরকার কেন তার ? আমার চোখ দুটো পিথাগরাসের উপপাদ্যের মাঝে অযথাই এই প্রশ্নের উত্তর খুজতে লাগল । এতক্ষন শুধু ছাত্রীর মন খারাপ ছিল , তাও পড়া যা একটু আগাচ্ছিল , কিন্তু যখন আমার ও ভয়াবহ মন খারাপ হতে লাগল তখন আর পড়া কিভাবে আগায় ? '' তোমার মন যেহেতু খারাপ আজ বরং একটু রিল্যাক্স থাকো ,আমি আসি '' বলে আমি পালিয়ে গেলাম । কিন্তু নিজের কাছ থেকে নিজে তো পালানো যায় না ।

আমি জানতাম আমি ফারাবী ভাই কে পাব না , একদিন না একদিন আমাকে অনেক কিছু এই চোখেই দেখতে হবে । কিন্তু আমি তো একদিন একদিন করে বেঁচে থেকে অভ্যস্ত হয়ে গেছি , তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে কখনই বেশিদূর ভাবতে পারতাম না । হাসতে হাসতে দিন কাটিয়ে কখন যে তাকে হারাবার দিন এগিয়ে এল সেটা টের ই পেলাম না । এখন সে চোখের আড়াল হবে , দুদিন বাদেই অন্য কারো সম্পদ হবে । আর আমি ফারাবী ভাইকে না পাওয়ার লিস্টে যুক্ত হব সবার চোখের আড়ালে । আমি কিন্তু অল্পতেই কেঁদে চোখ লাল করার মেয়ে , কিন্তু আজ আমি একটুও কাঁদলাম না । আজ আমি ভীষণ পরিনত ।

ছোটবেলা থেকেই রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনা আমি । খুব রাগ হলে চিৎকার করি , কিছুক্ষন পর যখন বুঝতে পারি যে চিৎকার করা ঠিক হয়নি তখন শব্দ না করে কাঁদি । আমার এতদিনের লুকোচুরি ভালবাসাটা হুট করে ভেঙ্গে যাওয়ায় যে কষ্ট আমার হচ্ছিল তা কিভাবে কিভাবে যেন রাগে রুপান্তরিত হয়ে গেল । সেই রাগে আমি না পারলাম চিৎকার করতে , না পারলাম কাঁদতে । ফলস্বরূপ পরদিন প্রচন্ড মাথাব্যাথায় ঘুম থেকে উঠলাম চোখ মুখ লাল করে । মাথাব্যাথায় রাতে এসে গেল সেই লেভেলের জ্বর । আমি প্যারাসিটামল নাপা ইত্যাদি ইত্যাদি সেবন করতে লাগলাম , এতদিনের অভিজ্ঞতা বলে তো একটা কথা আছে । পরের দিন সকালে কোন মাথাব্যাথা নেই , জ্বর নেই , কিন্তু এসিডিটির যন্ত্রণায় সোজা হতে পারলাম না । ভাবতে পারছিলাম না , কি পরিমান রাগটাই না করেছিলাম , মাথাব্যথা আর জ্বর দিয়ে বের হয়ে কুলাতে পারল না , এখন আবার এসিডিটি শুরু হয়েছে ! এরই মাঝে ডজনখানেক বার করে আম্মু আব্বু বলেছে ডাক্তারের কাছে যেতে , আমি ঘাড় বাকা করে বলেছি ,'' এমনেই সেরে যাবে ।''

বিকেল বেলায় যখন ১০০ ডিগ্রি জ্বর , হালকা মাথাব্যথা আর এসিডিটি তিনটাই হাজির হল , আম্মু তখন ভয় পেয়ে বলল ,'' রেডি হ ।'' আমি বিরক্ত হয়ে বললাম ,'' মরার জন্য ?'' '' থাবড়ায়া কানের পর্দাটা ফাটায় দিবো ।'' '' আচ্ছা দিও ।'' '' উঠতেছিস না কেন ? ডাক্তারের কাছে যাব চল ।'' ঘ্যানর ঘ্যানর চলতেই লাগল । শেষমেশ উঠলাম , ভাবলাম লাস্ট বারের মত তাকে দেখে আসিগে । আজকের পর আর কক্ষনো তার কথা ভাববনা । আম্মু কে বললাম , আমি একাই যেতে পারব ।

একা একা যেটা শুরু করেছিলাম , আজ কে একা একাই তার শেষ দৃশ্য টা দেখে আসি ।

৪. ফারাবী ভাই গালে হাত দিয়ে চিন্তিত মুখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল , '' এই অবস্থা হলে হবে ?'' তার কথার টাইপ শুনলে মেজাজ তো আমার এমনি খারাপ ই হয় । অন্যদিন যদিও আড়াল করার চেষ্টা করি , আজ আর করলাম না , বললাম , '' সেটা দিয়ে আপনার কি ? ওষুধ লিখে দেন । চলে যাই ।'' '' আচ্ছা '' , প্যাড হাতে নিতে নিতে বলল ,'' মাদ্রাজ যাচ্ছি জানো তো ? '' '' নাহ , এলাকায় এই নিয়ে কোন ব্যানার দেখিনি ।'' '' ও আচ্ছা তিহা বলেনি তোমাকে তাহলে । আমি মাদ্রাজ যাচ্ছি এই মাসের শেষে । আম্মা তো খুব করে ধরেছে , বিয়ে করে যেতে হবে । তা না হলে নাকি আমি একবার উড়াল দিলে আর ফিরে আসব না ।'' আমি চুপ করে থাকলাম । মনে মনে বললাম ,'' ছ্যামড়া তোর আসার জন্যে কে মরতেছে ?'' হুম আমি ই তো মরতেছি । '' বিয়ে করে দূরে যাওয়ার ইচ্ছা আমার নাই , বুঝলা ইরা ? এঙ্গেজ করে রাখা যায় । তাতে রাজি হয়েছি । '' এবারো কিছু বললাম না । তবে মনে হতে লাগল , এর কাছে কি আমি সুস্থ হতে আসছি নাকি জলদি মরে যেতে আসছি ? এই ছেলে আমাকে এসব শুনাচ্ছে কেন ? '' দেশে আসার পরে জাঁকজমক অনুষ্ঠান করে বিয়ে করব । বিয়েতে তোমাকে একটা রোল দেওয়ার কথাও আমি ভেবে রেখেছি ।'' আমি সরাসরি তার চোখের দিকে তাকালাম ,'' তাই , না ?'' আমার তাকানোর ভঙ্গীতে ডাক্তার সাহেব ভড়কে গেলেন সেটা আমি বুঝতে পারলাম । কোনরকমে বলল , '' ইরা তোমার কি হয়েছে ? কি সমস্যা ? অসুস্থ লাগছে ?'' নিজের উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে বলতে লাগলাম , '' এত কথা বলেন কেন আপনি ? আমার সমস্যা জানতে চান ? আমার সমস্যা কি সেইটা আপনি বুঝেন না ? মেডিকেল কলেজ থেকে কি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন ?মানুষের সাইকোলজি ধরতে পারেন না ? আমার কি সমস্যা সেটা কোন দিন বুঝবেন না আপনি , তাই প্লিজ জিজ্ঞেশ করবেন না । দয়া করে কোন কথা না বলে জ্বর আর এসিডিটির জন্য প্রেস্ক্রিপশান লিখেন ।'' এতগুলি কথা এক নাগাড়ে বলে দেখি , ফারাবী ভাই তখনও নিঃস্পৃহ চোখে তাকিয়ে আছে । আমি কেন এসব বললাম জানিনা , কেন জানি প্রচন্ড কান্না পেতে লাগল । কান্না চেপে রাখতে গিয়েও পারলাম না , চোখের সীমানা ছাড়িয়ে একুয়াস হিউমারদের স্বাধীন আনাগোনা শুরু হয়ে গেল । তাড়াতাড়ি চোখ মুছে তাকিয়ে দেখি সে কলমের ক্যাপ খুলছে , প্রেস্ক্রিপশান লিখবে । লেখা হয়ে গেলে সে কাগজটা আমার দিকে বাড়িয়ে দিল । আমি প্রেস্ক্রিপশানটার দিকে একবার তাকালাম ।

তাকিয়ে থাকলাম এবং তাকিয়েই রইলাম ।

'' ইরা , তোমার অসুখের একমাত্র চিকিৎসা টা হল , রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠবার পর এবং রাতে ঘুমাতে যাবার আগে ডা. ফারাবী আহসানের হাতে দুইটা করে কান মলা খাওয়া । এই ওষুধ লাইফটাইম চালাতে হবে । অন্যথায় রোগির জীবন মরন সমস্যা হবে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ডাক্তার সাহেবেরও জীবনের আশংকা ঘটবে । ''

প্রেস্ক্রিপশানের দিকে আমাকে হা করে তাকিয়ে থাকতে দেখে সে আমার চোখের সামনে তুড়ি বাজিয়ে বলল , '' কি হল ? '' আমি বোকার মত তাকিয়ে বললাম , '' আপনার লেখা বুঝতে পারছি না ।'' ফারাবী ভাই হতাশ হয়ে চুলে আঙ্গুল চালিয়ে বলল ,'' জীবনে বুড়া বয়সে একটা লাভ লেটার লিখলাম , তাও লেখাটা বোধগম্য হল না । এই দুঃখ কোথায় রাখি ? তবে একান্তই না বুঝলে কি আর করা , ওষুধের দোকানদারকে দেখাইও ।'' আমি ফোস করে নিঃশ্বাস ফেলে বললাম , '' আমি লেখাটা কোনরকমে পড়তে পেরেছি । কথা হল , এসব ফাজলামির মানে কি ? আমার সাথে সেই কবে থেকে আপনি কেবল ফাজলামিই করছেন ,এমনটা কেন করেন ? আমি একটা মানুষ ,আমার এত সহ্য হয়না । '' সে কয়েক মুহূর্ত একদম চুপ । আমি বললাম ,'' কি ? কথা বলেন না কেন ?'' '' কি বলব আমি ? এই ক্লিনিকের প্রতিটা স্টাফ , কম্পাউন্ডার , নার্স এমনকি দারোয়ান চাচা পর্যন্ত বুঝে যে আমি তোমার উপর ড্যাম খেয়ে আছি , আর তুমি বুঝলা না ? কি জন্য বুঝলা না , সেটা তো আমি বুঝলাম না । ''

আচ্ছা আসলেই কি আমার বুঝা উচিত ছিল ? আমার সাথে সে অনেক আজাইরা আলাপ করত , এগুলো কি ভালবাসত বলেই করত ? আসলেই মনে হয় আমার বুদ্ধি বয়সের সাথে ব্যাস্তানুপাতে বেড়ে যাচ্ছে ! আমি চোখ ছোট ছোট করে বললাম ,'' আমাকে না বিয়েতে কি একটা রোল দিবেন ?'' '' কেন ? কনের রোল ? কনে থাকতে হবে না ?''

৫. ফারাবী ভাই কে আমি এখন শুধু ফারাবী বলে ডাকি , যদিও সে আমার থেকে বয়সে ভালই বড় । কিন্তু কি আর করব , বাগদানের পরে তো '' ভাই'' বলতে গিয়ে কানমলা খেলাম , সেই রিস্ক কি আবার নেয়া যায় ? যাই হোক , আমি এখন ফারাবীর সাথে বসে আছি । আমাদের মাঝে দূরত্বটাও আপেক্ষিক , হয়ত খুব কাছে আবার হয়ত অনেক দূরে । কারন মাঝখানে দেয়াল হয়ে আছে ল্যাপ্টপের স্বচ্ছ স্ক্রিন টা । ডাক্তার সাহেব বাগদান করেই মাদ্রাজে দৌড় দিয়েছেন কিনা তাই !

'' ম্যাডাম খুব খেপে আছেন । কি হয়েছে ?" '' তোমার মস্তিষ্ক হয়েছে ।'' '' কেন ? মাদ্রাজ চলে আসছি বলে আবার মেজাজ গরম? '' আমি দাঁত কিড়মিড় করে বললাম , '' একবার দেশে আসো , তোমার গায়ে আমি কালাসাবান ছুড়ে মারবো । এপ্রন থাকা অবস্থায় ই ।'' ফারাবী করুন মুখে বলল ,'' ঠিক আছে , আমি ঐ এপ্রন পরেই বাইরে যাব । সবাই বুঝুক জীবিত এবং বিবাহিতদের মধ্যে পার্থক্য ।'' '' চুপপ ! ''

ফারাবী চুপ হয়ে মুচকি হাসতে লাগত । আর আমি সিদ্ধান্ত নিলাম , কালাসাবান আমি ছুড়ে মারবই । সাইজ করা দরকার ওকে । এপ্রন নোংরা হবে হোক । আমি যেহেতু নোংরা করব , আমিই পরিস্কার করব , সমস্যা না ।

কথা হল, বাজারে এখন ভাল ডিটারজেন্ট কোন টা ? সার্ফ এক্সেল ?নাহ যাই , টিভিতে বিজ্ঞাপন দেখতে হবে !
post by shakil hossain
---------------------------------------

Saturday, 14 January 2017

তবুও ভালবাসা

নিশা এসে চুপ করে বাবার পিছনে দাঁড়িয়েছে। বাবা পত্রিকা পড়ছেন।চোখে চশমা পরে। তিনি দিনে একবার চোখে চশমা পরেন, এই পত্রিকা পড়বার সময়। এখন তাকে কিছু বলা যাবে না। বললেই রেগে মেগে শেষ। নিশার বাবা দেশ সম্পর্কে যতটা সচেতন। নিশার মনে হয় না দেশ যারা চালায় তারাও এতো সচেতন। পত্রিকা নিবেন, এই মাথা থেকে ঐ মাথা পর্যন্ত পড়বেন, প্রথম পাতা শেষ করে তবেই দ্বিতীয় পাতায় যাবেন,খবরের বাকিটুকু মাঝের পাতায় থাকলেও তিনি পাতা উল্টাবেন না,যে পাতায় যে টুকু খবর থাকে তিনি তাই পড়েন। একটা একটা করে পাতা শেষ করবেন। এভাবে কেউ পত্রিকা পড়ে কিনা জানা নেই।পত্রিকা শেষ করে চা খাবেন এক কাপ।চা খেতে খেতে বলে যাবেন, এই হচ্ছে দেশে, ঐ হচ্ছে দেশে। দেশটা গেল। একেবারেই গেল।
নিশার পা ব্যথা হয়ে যাচ্ছে। তবু বাবাকে ডাকছে না। বাবাকে পরিবারের সবাই ভয় পায়। নিশাও পরিবারের কেউ। তাই ও ও বোধহয় একটু আধটু পায়। বাবা পত্রিকা শেষ না করেই মেয়ের দিকে তাকালেন।
- কিছু বলবে?
- না আব্বু, আপনি পত্রিকা পড়ে শেষ করেন। তারপর বলছি।
- আজ পত্রিকা পড়ে শান্তি পাচ্ছি না। কোমরে ব্যথা করছে। বল কি বলবে।


বাবা পত্রিকা নামিয়ে মেয়ের দিকে তাকালেন। নিশা কিছুটা ইতস্তত করছে কথাটা বলতে। তবুও বলেই দিল,
- আব্বু আমার কিছু টাকার দরকার ছিল।
বাবা শান্ত চোখে বললেন, কি কারণে?
-জি আমার এক বান্ধবীর জন্মদিন।ওকে একটা উপহার দিতে চাচ্ছিলাম।
-জন্মদিনে উপহার দিতেই হবে এমন কোন নিয়ম আছে? তোমাকে মোবাইল কিনে দেয়া হয়েছে। রাত ১২ টায় ঘুম থেকে উঠে, ১২ টা ১ মিনিটে ৫৮ পয়সা খরচ করে একটা মেসেজ দিবে তোমার বান্ধবীকে, শুভ জন্মদিন লিখে। ইচ্ছা করলে একটা কবিতাও দিয়ে দিতে পার সাথে।
-আমার অন্য সব বান্ধবীরা উপহার দিবে। তাছাড়া আমার গত জন্মদিনে যে উপহারটা পেয়েছি, তাও ও ই দিয়েছে।
- তুমি এতো বুঝ কেন? আমি কোন টাকা দিতে পারব না।তোমার অন্য বান্ধবীর বাবার টাকা আছে।তোমার বাবার নেই।আর 'ও' 'ই' করছ কেন? তোমার বান্ধবীর নাম নেই?
- আছে । তা আপনার জানতে হবে না।আর আপনি তো আমাকে কখনই টাকা দেন না। একটা মোবাইল কিনে দিছেন তাতেও কখনও ১০ টা টাকা রিচার্জ করে দেন না।
- মোবাইল এ টাকা দিয়ে তুমি কি করবে? কেউ কল দিলে রিসিভ করবে।এতোটুকুই যথেষ্ট ।আর তুমি ভারী বেয়াদব হয়ে গেছ। আমি লক্ষ্য করেছি, তুমি ইদানীং মুখে মুখে তর্ক কর। নিজেকে কি খুব বড় মনে করছ? মাত্র কলেজ পাশ করেছ। চান্স তো পাও নি কোথাও। পাবে বলেও মনে হয় না। প্রাইভেট ভার্সিটিতে পড়াবার মত টাকা তোমার বাবার নেই। তবুও আমার মনে হচ্ছে তাই করতে হবে। বিয়ের সম্বন্ধ আসছে, তুমি বিয়ে করতেও রাজি নও। তুমি চাও টা কি?
- আপনি এখন এসব বলা বন্ধ করবেন? এসব কথা প্রতিদিন আমি ১০ বার করে শুনি।আপনি পত্রিকা পড়েন। টাকা দিবেন না ভাল। এসব বলার দরকার নেই।


নিশা বাবার সামনে থেকে চলে আসল। রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিল। আয়নার সামনে দাড়িয়ে নিজেকে দেখছে নিশা। খুব একটা আয়না দেখে না নিশা। আয়না দেখলেই মনে হয়, ও দেখতে এমন তাই সবাই ওর সাথে এমন করে। মা দেখতে পারে না, বাবাও না। আত্মীয়স্বজনরাও না, বন্ধু বান্ধবীরাও না।কষ্ট হচ্ছে খুব। মানুষগুলো ঘুরে ফিরে অন্য মানুষের দুর্বলতা নিয়েই কথা বলে।এই যে নিশা কোথাও চান্স পাচ্ছে না, এতে নিশার নিজেরও খুব কষ্ট হয়।তবু বাবা মা দুজনেই দিনের মধ্যে ১০ বার এটা নিয়ে কথা বলবে। কষ্ট দিবে। আবার আয়নার দিকে তাকাল। কত কুৎসিত দেখতে নিশা। কত কালো, মোটা,খাটো। স্কুলে থাকতে সহপাঠীরা পিছন থেকে ওকে মুটি ডাকত।ও শুনত, কিন্তু না শোনার ভান করে চলে আসত। কষ্ট লাগত তখন। কলেজে ছেলেরা ওর নাম দিয়েছিল ড্রাম। কি বিচ্ছিরি নাম। তাও মুখ বুজে সইত নিশা। ঘরে এসে কাঁদত আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে।কিছু হলেই একজন অন্যজনকে বলত, দেখ, নিশার সাথে প্রেম করিয়ে দিব কিন্তু। যেন এটা কত ভয়ংকর একটা জিনিস। আর নিশা কত বিচ্ছিরি একটা মেয়ে। যাকে নিয়ে ফাজলামি করা যায়, পিছনে খারাপ কথা বলা যায়, প্রেম করা যায় না।একবার কে যেন ক্লাসের এক ছেলে জাহিদকে, নিশার নাম করে একটা প্রেম পত্র লিখেছিল। জাহিদ সেই প্রেমপত্র নিয়ে নিশার সামনে এসে বলেছিল, এই শরীর নিয়ে প্রেম করার শখ। আয়না দেখো কখনও। তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরলে তো আমি দম বন্ধ হয়ে মরে যাব। এই নাও তোমার প্রেম পত্র। চরিত্র ঠিক কর। শরীরের এই সাইজ কিভাবে হয় আমরা জানি।


নিশা চুপ করে কথাগুলো শুনে। কতগুলো বাজে কথা বলল জাহিদ। বিনা কারণেই। সবাই ওকে নিয়ে ঠাট্টা করে। কেউ পছন্দ করে না। শুধু একজন ছাড়া।রিমন।নিশাকে ভালবাসে।কেন যেন মনে হয় এই একটা মানুষই শুধু নিশাকে পছন্দ করে। দেখা হলে কষ্ট দেয় না। দুঃখের কথা বলে মন খারাপ করে দেয় না।কোন দুর্বলতা টেনে এনে মুখ গোমড়া বানিয়ে দেয় না।ভাল লাগা কাজ করে, যে টুকু সময় কাছে থাকে, যে টুকু সময় কথা বলে।সবার সাথে যা হয়, রিমনের বেলায় হয় তার উল্টা। সবাই বলে নিশা এমন নিশা অমন, কুৎসিত পচা, এই পারে না, ঐ করেনা। আর রিমন সবসময় ভাল কথা বলে।নিশাই বরং বলে তখন, ও তো এমন, কেন ওকে ভালবাসে? ভালবাসার কি আছে?
রিমন চট করে বলে দেয়, সব সৌন্দর্য সবাই দেখে না।
একটা মানুষ কি করে এতো ভাল হতে পারে ,নিশা জানে না।রিমনের ভিতর কোন খুঁত খুঁজে পাওয়া যাবে না। ছাত্র ভাল,দেখতে ভাল, ভদ্র, মন ভাল। আর নিশার ভিতর হাজারটা খুঁত।রিমন ইচ্ছা করলেই অনেক সুন্দরী মেয়ের সাথে প্রেম করতে পারে।এই কথা যখন নিশা বলে, রিমন চোখ বন্ধ করে আস্তে করে নিশার হাত ধরে।
- অনুভব করতে হয় এভাবে। আমি এখন তোমার পবিত্র মনটার ভিতর আছি। যেখানে এক বিন্দু অসুন্দরের আঁচও নেই।ভালবাসা তো মনের ব্যাপার, সাদা চামড়ায় সৌন্দর্য থাকে না।সাদা চামড়া চোখ জুড়ায়। কিন্তু আমার তো মন জুড়াতে হবে।এই দেখো চোখ বুজে আছি,এখন কিন্তু আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। কিন্তু মন থেকে ঠিকই অনুভব করতে পারছি। এই যে চোখ মেললাম। এখন দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু এখনও মন থেকে অনুভব করার ব্যাপারটা আছে। বুঝতে পারছ? তাহলে বল, আমার কোনটা বেশি দরকার? সাদা চামড়ায় চোখ জুড়ানো ,নাকি মন জুড়ানো?


নিশা কিছু বলে না। শান্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে রিমনের দিকে।রিমন হাতটা আরও একটু শক্ত করে ধরে। মুখে চোখে অন্যরকম একটা ভাব ফুটিয়ে বলে, কখনই বুঝবে না কতটা ভালবাসি? আরে, একটু বুঝলে কি হয়? এই বেচারা যে তোমার জন্য পাগল হয়ে আছে তা কি চোখে পরে না?চশমা পরি আমি, তুমি কেন দেখো না?এই নিশা।


নিশা তাও চুপ। রিমনকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখতে ভাল লাগছে। বুকের ভিতর কেমন যেন হিম শীতল অনুভব হচ্ছে।সেই শীতলতায় কষ্ট নেই, আছে এক রাশ সুখের অনুভুতি। যেই সুখ হাত দিয়ে ছোঁয়া যায়। বুকের ভিতর লুকিয়ে রাখা যায়। গায়ে মাখিয়ে চুপচাপ ভাল থাকা যায়।নিশা রিমনের কপালের সাথে কপাল লাগাল।নিশার নিশ্বাস আর রিমনের নিশ্বাস কথা বলছে জড়াজড়ি করে। নিশা আস্তে করে বলে,কতদিন ভালবাসবে?


রিমন নিশার হাতটা বুকের উপর নিয়ে বলল, বুকটা বুঝলে অকারণেই ওঠানামা করে। এই অকারণ কাজটা যতদিন চলবে ততদিন ভালবাসব।


এই ভালবাসা বাসতে নিশার ভয় হয়।অকারণেই ভয় হয়। কেন যেন অন্য কোন মেয়েকেই রিমনের আশেপাশে সহ্য করতে পারে না। মনে মনে ভাবে, এই বুঝি হারিয়ে গেল।রিমন এসে সব কথা নিশাকে বলে। সারাদিন কি করল না করল। সেদিন বলল, আজ আমাদের ল্যাব এর গ্রুপ করে দিল।
- কোন মেয়ে আছে?
- হ্যাঁ একজন।
- তুমি মেয়েদের গ্রুপে গেলে কেন?
- আমি কি গেলাম? রোল নাম্বার অনুসারে পরে গেছে।
- তুমি কি ওর সাথে কথা বলছ?
- এক সাথে গ্রুপে কাজ করব, একটু আধটু তো কথা বলতেই হবে। তবে পড়ালেখার কথা বলব। এমনি অন্য কোন কথা বলব না। বুঝতে পেরেছ? এতো চিন্তা করতে হবে না।


তাও নিশার চিন্তা হয়। প্রতিদিন জিজ্ঞেস করে, ঐ মেয়ের সাথে কথা বলছ?
কোনদিন রিমন বলে ,না বলি নি। কোনদিন বলে, হ্যাঁ কাজ করার সময় আমাকে একটা কিছু জিজ্ঞেস করল তার উত্তর দিলাম।
নিশার তাতেই মন খারাপ। জানে রিমন অনেক ভাল ছেলে। অমন কিছু করবে না যাতে নিশা কষ্ট পায়। তবুও নিশার কষ্ট লাগে। কষ্টটা হয়ত নিজের অবস্থার কারণেই। নিজেকে নিয়ে খুব হতাশায় ভোগার কারণেই। কারও কাছ থেকে ভালবাসা না পাবার কারণেই ভাবে, হয়ত রিমন হারিয়ে যাবে। এটা মনের ভুল। নিশা নিজেকে খুব অসুন্দর ভাবে। অবচেতন মনে ভাবে ওকে ভালবাসার কিছু নেই। এই ভাবনা থেকেই রিমনকে হারাবার ভয় আরও ঝেঁকে বসে মনে। কিন্তু জানে রিমন হারাবার না। রিমন নিশার ভালবাসা মনের ভালবাসা, মোহের ভালবাসা না। মোহের ভালবাসা হারিয়ে যায়। মনের ভালবাসা না।
কাল এই ভালবাসার মানুষটার জন্মদিন। খুব দামি কিছু দেবার সাধ্য নিশার নেই। তবুও কিছু একটা তো দিতে হবে।তাই বাবার কাছে টাকা চাইল। মিথ্যা বলল, বান্ধবীর জন্মদিনের কথা বলে।প্রেম করে শুনলে বাবা ঘর থেকে বের করে দিবে। তবে একা না, অন্য যেন কোন একটা ছেলের সাথে বিয়ে দিয়ে।রিমন তো এখনই বিয়ে করতে পারবে না। ওর পড়ালেখা শেষ হবে তারপর।বাবাকে কে বুঝাবে?বাবা টাকাটা দিল না। বাবার উপর খুব রাগ হচ্ছে।অনেক বলাবলির পর একটা মোবাইল কিনে দিয়েছিল। তাও কখনও টাকা রিচার্জ করে দেয় না। বাসা থেকে তিনদিন বের হয় নিশা।কোচিং এর তিনদিন।এই তিনদিন ১০ টাকা করে দেয় নিশাকে। লেগুনা করে যাওয়া আর আসার জন্য। যাবার সময় লেগুনায় যায় নিশা আর আসবার সময় রিমনের সাথে।বাসা থেকে একটু আগে থাকতে নামিয়ে দিয়ে যায় রিকশা থেকে রিমন। সপ্তাহে সঞ্চয় ১৫ টাকা।তা মোবাইলে রিচার্জ করে নিশা। কত হিসেব করে চলতে হয়। একটা গিফট কিনবে সেই টাকাও নেই। জমানো টাকাও না। জমাবার উপায় নেই। কি করবে তাহলে? রিমনকে জন্মদিনে কিছুই দিবে না?ভাবতেই কান্না পাচ্ছে নিশার। এতো এমন কেন ওর পরিবারটা?


বাহিরে চেঁচামেচির শব্দে নিশার ভাবনায় ছেদ ঘটল।কি হল আবার? চোখ মুছে রুম থেকে বের হয়ে আসল। নিশার ছোট ভাই নাবিল, চোখে মুখে ভয় ফুটিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। হাত পিছনে লুকানো।মা চিৎকার করছেন।বাবা পত্রিকা হাতে দাঁড়িয়ে আছেন।চোখ লাল করে তাকিয়ে আছেন নাবিলের দিকে। মা একটু একটু পর পর বাবাকে বলছেন, আপনি বসেন, আমি ওকে দেখতেছি।
বাবার রাগ কমেনি। পত্রিকা রেখে এসে নাবিলের ঘাড়ে ধরলেন।গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে চড় মারলেন কয়েকটা।একটা গালেও পড়ল। নাবিল চিৎকার করে কাঁদছে, আর আনব না আব্বু। ও আম্মু আর আনব না এগুলা।
নিশা ছুটে গিয়ে নাবিলকে বাবার হাত থেকে ছাড়িয়ে নিল।বাবাকে অনেকটা ধাক্কা মারার মত করে দূরে সরিয়ে দিল।
বাবা বললেন, তোমাকে একদিন বলছি না, নাবিলকে মারার সময় তুমি আসবে না এদিকে?
নিশাও গলা উঁচু করে বলল, আপনি ওকে মারবেন কেন? এতটুকু ছেলে।
- মারব না মানে? তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার কাজ করতে হবে? জিজ্ঞেস কর সে কি করছে?


নিশা নাবিলকে জিজ্ঞেস করল, কি করছিস তুই?
গালে হাত দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলল, এইটা কিনছি।


নাবিল পিছন থেকে হাত সামনে আনল।ছোট একটা খেলনা পিস্তল।
- তুই টাকা পাইছিস কই?
- আম্মু প্রতিদিন টিফিনে টাকা দেয়। আমি খাই না। জমিয়ে রাখি। তা দিয়ে কিনছি। আর কিনব না আপু সত্যি কথা। আর কিছু কিনব না।


নিশার বাবা আবার চিৎকার করে উঠল, সে কি গুন্ডা মাস্তান যে পিস্তল কিনছে?সারদিন কতগুলা বদমাইশ পোলাপানের সাথে খেলাধুলা করে এই অবস্থা তার। আজ থেকে যদি বাইরে গেছিস তুই, তোর পা ভেঙ্গে ফেলব।সারাদিন পড়বি।পরীক্ষায় তো মার্কস পাস না, খেলার বেলায় ওস্তাদ। সারাদিন খেলে ,তখন তার সমস্যা হয় না। সন্ধ্যার পর পড়তে বসলেই তার মাথা ব্যথা করে, পা ব্যথা করে। শয়তান ছেলে।
- আপনি চিল্লাচ্ছেন কেন? ও ওর টাকা দিয়ে আনছে। খেতে দিছেন, তা জমিয়ে ও আনছে। এতে ওকে মারার কি আছে?
- হ্যাঁ, ওর টাকা। ও কি টাকা ইনকাম করে? তোমরা তিনজন তো শুধু আছ খাওয়ার চিন্তায়। খাবে আর মোটা হবে। একটা টাকা উপার্জনের উপায় তো কারও জানা নেই।


নিশা মার দিকে তাকাল। মা চুপ করে আছেন। শাড়ি দিয়ে মুখ ঢেকে কাঁদছেন।এই মহিলা এমনই।কিছুই বলবেন না কখনও, শুধু কাঁদবেন।
নিশা বাবার সাথে তর্ক চালিয়েই যাচ্ছে
- তাও ,ও টাকাটা খেয়ে ফেলতে পারত। তা না করে একটা খেলনা কিনছে। তাতে হইছে টা কি?
- এহ খেলনা কিনছে।সে টাকা জমাইছে ভাল। তা দিয়ে খাতা কলম কিনতে পারত। কাজে লাগত। বা আমারে দিয়ে বলত, যান আব্বা বাজার করে নিয়ে আসেন। না পিস্তল কিনছে। হারামজাদা, পিস্তল কিনছে। পিস্তল দিয়া কি করবি তুই? কারে মারবি? আমাকে একটা গুলি কইরা মাইরা ফেলা। শান্তি পাই।তোদের টানতে আর ভাল লাগে না।
- আমাদের জন্য কত যে কি করেন দেখি।নাবিলকে কখনও একটা খেলনা কিনে দেন নায়। নিজে একটা কিনে আনছে টাকা জমিয়ে তাও ধরে মারতেছেন।আম্মাকে একটা ভাল কাপড় কিনে দেন নায়। আমি এতো বড় একটা মেয়ে, কোনদিন ভাল একটা কিছু কিনে দেন নায়।কোনদিন এক্সট্রা টাকা দেন নায়। খালি তিনবেলা খাওয়াতে পারেন আমাদের।


মা এবার ছুটে আসলেন। নিশাকে ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন, খুব বড় হইছিস? বাবার মুখে মুখে কথা বলিস। ঘরে যা। যা।
নিশা ঘরে চলে গেল। বাবা চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছেন। মেয়েটা কত কথা বলল। একটুও ভয় পায় না।
মা নাবিলকে ধরে আর একটা চড় দিল। বলল, যা খেলনা ফেরত দিয়ে টাকা নিয়ে আয়।
নাবিল খেলনা পিস্তলটা নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেল। ক্লাস ফোরে পড়ে নাবিল। এই বয়সে বাচ্চাদের খেলনার শখ হয় ই। কত শখ করে একটা খেলনা কিনে আনল।ধরতে গেলে জীবনের প্রথম ভাল খেলনা।খাবারের টাকা জমিয়ে কেনা খেলনা।কত দুপুর না খেয়ে কাটিয়েছে এই খেলনা কেনার জন্য। বন্ধুদের খেতে দেখেছে, তবু আস্তে করে টাকাটা জমিয়ে রেখে দিয়েছে। একটা খেলনা পিস্তল কিনবে তাই।অভাবে মানুষের শখ আহ্লাদ হারিয়ে যায়। কোথায় হারায় জানা নেই। একটা সময় এসে কোন শখ হয় না, কোন বাসনা আসে না। একটাই চিন্তা। ৩ বেলা খাব। থাকব।ঘুমাব। ব্যাস।
নাবিলকে দোকানদার কিছুতেই পিস্তল ফেরত নিয়ে টাকা দিবে না।বিক্রি করা জিনিস এরা ফেরত নেয় না। নাবিল অনেক করে অনুরোধ করছে তাও নিচ্ছে না। গালের চড়ের দাগ দেখিয়ে বলল এই পিস্তলের জন্য ওকে বাসায় মারছে। টাকা না নিয়ে গেলে মেরে ফেলবে। তাও দোকানদার ফেরত দিবে না।হঠাৎ ই নাবিল একটা কাজ করে ফেলল। দোকানে ঢুকে দোকানদারের পা জড়িয়ে কাঁদতে লাগল, আঙ্কেল টাকাটা দেন না। টাকা না নিলে আব্বু মেরে ফেলবে। আমি কথা দিলাম পরে কিনা নিব পিস্তল। আঙ্কেল আপনার পা ধরতেছি আঙ্কেল। পিস্তলটা ফেরত নেন।
দোকানদার একটু অপ্রস্তুত হয়ে গেল। নাবিলকে তুলে বলল, আচ্ছা টাকা দিতেছি। তবে এমন আর করবা না ভবিষ্যতে। বাসায় না জানিয়ে কিছু কিনবে না।আর পুরা টাকা ফেরত পাবে না। নাও ৪০ টাকা। যাও এখন।
নাবিল কিছুক্ষণ ১০ টাকার জন্য কান্নাকাটি করল। লাভ হল না।দোকানদার দিল না।তাই ৪০ টাকা নিয়েই ঘরে চলে আসল। এসে সোজা বোনের ঘরে। নিশার কোলের ভিতর ঢুকে বলল, আপু আমাকে ১০ টা টাকা ধার দিবে?টিফিনের টাকা জমিয়ে ফেরত দিয়ে দিব। দোকানদার ৪০ টাকা দিছে। বাকি ১০ টাকা দেয় না। আব্বু আবার অনেক মারবে ৫০ টাকা না দিতে পারলে।
নিশা পার্সটা খুলল।১০ টাকাই আছে। ছোট ভাইটার হাতে টাকাটা দিল। ভাই অনেক সস্তির একটা নিশ্বাস ছাড়ল। গালে চড়ের দাগ এখনও আছে। নাবিল ফর্সা। তাই গালে দাগটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। টাকাটা নিয়ে চলে যাচ্ছিল নাবিল। আবার ফিরে আসল। আপুর কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করল, আপু মানুষ গরীব হয় কেন?
নিশার এর উত্তর জানা নেই। আসলেই কেন হয় গরীব মানুষ? নিশা নাবিলকে কিছু বলল না। নাবিল কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে চলে গেল। বাবার কাছে গিয়ে বাবার হাতে টাকাটা দিয়ে বলল, আব্বু টাকাটা রাখো। কিছু বাজার করে এনো।
বাবা কাঁপা হাতে টাকাটা নিলেন। নাবিল মাথা নিচু করে চলে গেল। বাবা টাকাটা পকেটে রেখে দিলেন। আসলেই কত সহজে ছেলেটার জমানো টাকা নিয়ে নিলেন বাবা। একটুও মনে হল না, ছেলেটার না খেয়ে জমানো টাকা। কিন্তু তিনি এমন ছিলেন না। অভাব মানুষের অনেক কিছু বদলে দেয়।অভাব মানুষকে ভাল আচরণ করতে ভুলিয়ে দেয়।যখন মাথায় চিন্তা থাকে আজ কিভাবে চলবে দিন। কি খাবে না খাবে। তখন ভিতর থেকে ভাল আচরণ আসে না।নিশার বাবারও তাই আসছে না।এতো এমন ছিল না পরিবারের অবস্থা।বিদ্যুৎ অফিসে কাজ করত নিশার বাবা। হঠাৎ করেই শরীর অসুস্থ হয়ে গেল। কাজ করতে পারেন না আর।হাঁটতে কষ্ট হয়, চলতে কষ্ট হয়, পরিশ্রম করতে কষ্ট হয়।কাজটা ছেড়ে দিলেন। এখন ডিম বিক্রি করেন। প্রতি সন্ধ্যায় বাসার সামনে সেদ্ধ ডিম নিয়ে বসেন। সাথে এক লোক থাকে, যে কিনা ডিম ছিলে বিক্রি করে। আর নিশার বাবা পাশে বসে থাকেন। যা উপার্জন হয় প্রতিদিন, তাকে ৩ ভাগ করে ১ ভাগ দিতে হয় ঐ লোকটাকে। বাকি টাকা বাবার। এই টাকা থেকে কিছু টাকা রেখে দিতে হয় পরের দিনের ডিম কিনবার জন্য।আর যে টাকা থাকে তাতে ঠিকভাবে চলে না সংসার।সংসারের এই অবস্থা থাকলে কারও ই মন মেজাজ ভাল থাকবার কথা না।তার উপর মেয়েটা কোথাও চান্স পাচ্ছে না। কয়েকটা ভর্তি পরীক্ষা দিল। মনে হয় প্রাইভেট ভার্সিটিতে ভর্তি করাতে হবে। এতো টাকা পাবে কই?গ্রামে কিছু জমি আছে। একজনের সাথে কথা হয়েছে। জমিটা বিক্রি করে দিবেন। যত যাই হোক, মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ করা যাবে না।বাবা ভাবছেন, তার যেমন মন মেজাজ খারাপ হচ্ছে সংসারের অবস্থা নিয়ে। সংসারের অন্য কারও তা হওয়াটা স্বাভাবিক।অন্য কেউ দেখাচ্ছে না, নিশা দেখাচ্ছে।তিনিও বা কেমন বাবা, মেয়েটা বড় হয়েছে। এখন ওর কিছু সাধ আহ্লাদ হতেই পারে। কিন্তু তিনি তার কিছুই পূরণ করতে পারছেন না।ছোট ছেলেটাকেও একটা খেলনা কিনে দেননি কখনও। বউটাকেও কিছু দেননি। বাবা হিসেবে ব্যর্থ, স্বামী হিসেবেও, মনে মনে ভাবছেন। মেয়েটার সাথে সকাল থেকে খারাপ ব্যাবহার করছেন, রাগারাগি করছেন। এখন খুব খারাপ লাগছে।
নিশা ঘরে বিছানার উপর বসে আছে।বাবা দরজার কাছে এসে বললেন, আচ্ছা ঘরে কি আসা যাবে?
নিশা দেখল, বাবা দরজার কাছে দাঁড়িয়ে।মন খারাপ করে বলল, আমি কি জানি?
- না, আসলে একটা কথা ছিল।
- আসেন না কেন?
বাবা ঘরে ঢুকলেন। এদিক ওদিক তাকালেন।
- তোমার ঘরে অনেক দিন আসা হয় না।তুমি তো অনেক সুন্দর সাজিয়ে রাখছ ঘরটা। তোমার অপদার্থ ভাইটাকে মাঝে মাঝে এনে দেখিও। তার পড়ার টেবিলে গেলে দেখা যায় মাকড়সার বাসা, তেলাপোকার গু। কি অবস্থা। পড়ালেখা করা ছেলের পড়ার টেবিল অমন হয়?
- কিছু বলবেন বাবা?
- কিছু বলার জন্যই আসতে হবে শুধু? তোমার ঘরে কি এমনি মাঝে মাঝে আসা যাবে না?
- যাবে।
- আসলে মা, আমি অনেক খারাপ , তাই না? তোমাদের সবার সাথে রাগারাগি করি। ঠিক মত খেয়ালও রাখতে পারি না তোমাদের। আমি কি এমন ছিলাম বল? সংসারের এই অবস্থা, কি করে মাথা ঠিক থাকে বল? আমি তোমাদের অনেক ভালবাসি। সত্যি অনেক। তোমরা শুধু আমাদের রাগ দেখ। আমি এতো খারাপ।


বাবা ছলছল চোখে তাকিয়ে আছেন।চোখ মুখ বলে দিচ্ছে বুকের ভিতর কতটা কষ্ট হচ্ছে। নিশারও কষ্ট হচ্ছে বাবার কথাগুলো শুনে।তাই তো, বাবা ইচ্ছা করে এমন করছেন না।যেই মানুষটার মনে সারাদিন সংসার কিভাবে চলবে সেই চিন্তা, তার মেজাজ ভাল থাকবার কথা না। আর নিশাও তো অনেক খারাপ ব্যাবহার করল বাবার সাথে।একদম ঠিক না। বাবা মা কিছু বলতেই পারে। তাই বলে এমন করবে ও। বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে নিশার খুব কষ্ট হচ্ছে।বাবার সামনে দাঁড়িয়ে বলল,আপনি এভাবে বলছেন কেন?আব্বু আমাকে মাফ করে দেন। আমার আপনার সাথে অমন করে কথা বলা উচিৎ হয় নি। আমাকে মাফ করে দিন আব্বু।


নিশার গাল বেয়ে পানি পড়ছে। বাবা মেয়ের গালের পানি মুছে বললেন, পাগলি মেয়ে আমার। কাঁদে না।


বাবা পকেটে হাত দিয়ে টাকা বের করলেন। ৫০ টাকা। নাবিলের দেয়া ৫০ টাকা।নিশার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললেন, নাও মা।কাল না তোমার বান্ধবীর জন্মদিন। এটা দিয়ে কিছু কিনে দিও। আমার কাছে আর টাকা নেই।
নিশা বাবার হাত ধরে বলল, না আব্বু, টাকা লাগবে না। আপনি এটা বরং নাবিলকে দিন।ও অনেক কষ্ট করে জমিয়েছিল টাকাটা।ও অনেক কষ্ট পাইছে। আপনি এক কাজ করেন, নাবিলকে নিয়ে গিয়ে পিস্তলটা কিনে নিয়ে আসুন। ছোট ছেলে। এতো আশা করে একটা খেলনা কিনল।
- ভাল বলেছ তো। আচ্ছা আমি ওকে নিয়ে বাজারে যাই। কিন্তু তোমার বান্ধবীর জন্মদিন?
- লাগবে না বাবা।


বাবা রুম থেকে বের হয়ে গেলেন। কিছুক্ষণ পর নিশা দেখল বাবার হাত ধরে নাবিল যাচ্ছে। মুখটা হাসি হাসি। বাবার মুখেও হাসি। অনেকদিন পর বাবাকে হাসতে দেখছে নিশা। মাকেও দেখা যাচ্ছে দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি হাসছেন না। আঁচল দিয়ে মুখ ঢেকে কাঁদছেন। কি আজব। এতে কাঁদার কি আছে? সবাই কত আনন্দে আছে।মা ও হয়ত আনন্দেই কাঁদছেন। কাঁদতে কাঁদতে হাসতে ভুলে গেছেন হয়ত। তাই আনন্দেও কাঁদছেন। নিশারও খুব ভাল লাগছে। অনেকদিন পর ঘরে একটা সুখ সুখ ভাব এসেছে।এই সুখ সারাজীবন থাকুক। মাঝে মাঝে খুব অল্প কিছু, অল্প সুখ, অল্প হাসি অনেক বড় মনে হয়।অনেক শান্তি দেয়।



সকাল বেলা একটু তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠেছে নিশা।আজ রিমনের জন্মদিন। সকালেই গোসল করে মায়ের ঘরে গেল।
- মা আমাকে একটা শাড়ি দিবে?
- কি করবি?
- শাড়ি দিয়ে মানুষ কি করে? পরব।
- শাড়ি পরে কই যাবি? আজ না তোর কোচিং আছে। কোচিং এ শাড়ি পরে যাবি? কি বলিস এসব?


বাবা বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় বললেন, আহা, তুমি এতো কথা বলছ কেন? মেয়েটা একদিন শাড়ি পরতে চাচ্ছে। দাও তো।একটু সুন্দর দেখে দিও। আমি তো বুঝি না কোন শাড়ি সুন্দর, কোনটা অসুন্দর।
মা একটা শাড়ি দিলেন।হালকা সবুজ রঙের।মেয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে একটু হাসল। বাবাও হাসলেন।
শাড়ি পরে ঘর থেকে বের হয়েছে নিশা। আজও ১০ টাকা দিয়েছেন মা। যাওয়া আসবার জন্য। খুব আনন্দ হচ্ছে নিশার। আজ প্রথম শাড়ি পরে দেখা করবে রিমনের সাথে। একটু একটু লজ্জাও করছে। নিশ্চয় দেখতে খুব পচা লাগছে ওকে।ওকে কখনই দেখতে সুন্দর লাগে না। আর নিশার একটু খারাপ লাগার অনুভূতি হচ্ছে রিমনকে কোন উপহার দিতে পারবে না জন্মদিনে তাই।কোচিং এ যাবার আগে একবার দেখা হয় রিমনের সাথে, কোচিং শেষে একবার। লেগুনায় উঠার আগে একবার কল করে রিমনকে।বলে যে লেগুনায় চড়েছে। মাঝে একবার কথা হয় লেগুনার ভিতরে থাকতে।আর নেমে হয় দেখা।আজও রিমন অপেক্ষা করছে নিশার কলের। আজ একটু বেশিই দেরী করছে।কিছুক্ষণ পরে কল করল নিশা, এই শোন, আমি লেগুনায় চড়তেছি। আর আজ মাঝখানে কথা বলব না। একজন পরিচিত মানুষ আছে লেগুনায়।
- আচ্ছা ঠিক আছে। দেখে শুনে এস।
- হুম, আসব তো। লেগুনার ভিতর আমি দেখে শুনে আসব? ড্রাইভারকে বল, যেন দেখে শুনে চালায়।
- ওহ, কি যে বলনা তুমি। আসো এখন।
- হুম, আসতেছি।রাখি।


নিশা কল কেটে দিল। রিমন দাঁড়িয়ে রয়েছে লেগুনা স্ট্যান্ডে।কাল রাতে ঠিক ১২ টায় ফোন দিয়েছিল নিশা। কল করে শুভ জন্মদিন বলল। রিমনও তাই আশা করেছিল।ভাললাগার অনেকখানি ছুঁয়ে গেছে হৃদয় ,অতটুকু শুভ জন্মদিন শুনাতে। এতো ভালবাসা নিশার প্রতি, তাও নিশা বুঝে না। প্রতিদিন বলে, আমাকে ছেড়ে যাবে নাতো?
এহ, ভালবাসা ফাজলামি নাকি? আজ একজনকে ভালবাসলাম, কাল তাকে ভুলে অন্য জনকে।আর নিশাকে তো রিমন মন থেকে ভালবাসে। মন থেকে বাসা ভালবাসা এতো সহজে হারায় না। ভালবাসার মানুষ দূরে গেলেও বুকের কোণে লুকিয়ে থাকে ভালবাসা।মনের ভালবাসা মরে না।কিসব মরামরির চিন্তা করছে রিমন।আজ ওর জন্মদিন। তার চেয়ে কিছু জন্মাজন্মির চিন্তা হোক। নিশাকে বিয়ে করলে বাচ্চা কাচ্চা তো হবেই। মেয়ে হলে নাম হবে রিনি। রিমনের রি আর নিশার নি। আর ছেলে হলে শান। নিশার শেষের শা আর রিমনের শেষের ন। বাহ কি সুন্দর। নিশার মত সুন্দর। আজ নিশা মেয়েটাকে বলতে হবে ওর কি কি রিমনের ভাল লাগে। অপূর্ব এক জোড়া চোখ আছে নিশার। যে চোখের দিকে তাকিয়ে সারাজীবন কাঁটিয়ে দেয়া যায়। খাওয়া দাওয়ারও চিন্তা করতে হবে না। সুন্দর দেখে পেট ভরে যাবে। আর চেহারার মধ্যে একটা মায়া আছে। কেমন মায়া মায়া চেহারা যেন। কৃষ্ণমায়া।আর ওর মত ভাল মেয়ে পাওয়াটাও ভাগ্যের ব্যাপার। সবার এতো সুন্দর মন থাকে না। সবচেয়ে বড় কথা রিমন নিশাকে ভালবাসে। ভালবাসা কিছু দেখে হয় না, কিছু বুঝে হয় না, ভালবাসা হয়ে যায়, অকারণেই হয়ে যায়। রিমনের ভালবাসাও হয়ে গেছে।ভালবাসার গভীরে চলে গেছে। এই গভীরতা থেকে উঠে আসা অসম্ভব।তাই ভালবেসে যাচ্ছে নিশাকে।
কি ব্যাপার?এতক্ষণ হয়ে গেল, এখনও আসবার খবর নেই নিশার। লেগুনা এখনও আসছে না কেন?হঠাৎ করেই স্ট্যান্ডে অপেক্ষা করা লোকজনের কথায় কান গেল রিমনের।
"আহারে, শুনলাম একজন মারাও গেছে। একটা মেয়ে। লেগুনার অন্য একটা মেয়ের অবস্থাও নাকি ভাল না। বাকিরা প্রায় সবাই চরম ব্যথা পাইছে।"
একটু ভাল করে কথায় কান দিল। এখানে আসবার সময় নাকি একটা লেগুনা এক্সিডেন্ট করেছে।হঠাৎ করেই রিমনের বুকের ভিতর ধক করে উঠল।হাত পা সব ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে। চোখে কেমন সব ঘোলা ঘোলা দেখছে। এখানে যে লেগুনা আসবে তাতে তো নিশাও আছে। নিশার নাম্বারে কল করল। বন্ধ।বুকের ভিতরের ব্যথা বাড়ছে।দৌড় দিল রিমন, কোথায় এক্সিডেন্ট করেছে দেখার জন্য। কতদূর যেতেই দেখল অনেক মানুষের ভিড়।ভিড় ঠেলে ঢুকল। লেগুনাটা ভচকে গেছে, চ্যাপ্টা হয়ে আছে। এ্যাম্বুলেন্স চলে এসেছে, যারা আহত তাদের নিয়ে যাবার জন্য।দৌড়ে গিয়ে সবার মুখ দেখছে রিমন।এই মুখগুলোর ভিড়ে অবচেতন মনেই নিশার মুখ খুঁজছে।কিন্তু পাচ্ছে না।বুকের কষ্ট চোখে অনেক তাড়া দিচ্ছে।টপ টপ করে পানি পড়ছে চোখ দিয়ে। চ্যাপ্টা লেগুনার মধ্যে উকি দিয়ে মানুষ খুঁজছে,নিশার মুখ খুঁজছে।ওখানেও নেই।একজনকে জিজ্ঞেস করল যে মেয়েটা মারা গেছে সে কই?
লোকজন বলল, মেয়েটাকে নিয়ে গেছে হাসপাতালে। মেয়েটা দেখতে কেমন বলাতে, লোকজন বলল, বয়স কম করে, শাড়ি পরা।
মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল রিমন।কাল রাতেই বলেছে আজ শাড়ি পরে দেখা করবে নিশা।চিৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছা করছে রিমনের। চোখ দিয়ে পানি পড়ছে তবুও বুকের কষ্ট কমছে না।নিশাকে খুব দেখতে ইচ্ছা করছে।
হঠাৎ পিছন থেকে খুব পরিচিত কারও ডাক শুনল রিমন।
" রিমন, এই রিমন। ওখানে কি কর?"
রিমন মুখ ঘুরিয়ে চাইল।শাড়ি পরা একটা মেয়ে। নিশার মত লাগছে মেয়েটাকে। অবচেতন মনের ভাবনায় সব এলোমেলো হয়ে গেছে।নিশার এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকার কথা না।রক্ত মাখা হাত দিয়ে চোখটা একটু মুছল।নিশাই তো ওটা।সবুজ রঙের শাড়ি পরা।উঠে গিয়ে কিছু বলা কওয়া নেই, নিশাকে জড়িয়ে ধরল এতো মানুষের মাঝে।জড়িয়ে ধরে কাঁদছে।পিঠের কাছে হাতের রক্ত লেগে যাচ্ছে।একটা ছেলে কাঁদছে একটা মেয়েকে জড়িয়ে, ব্যাপারটা খুব একটা স্বাভাবিক না। তাই সবাই হা করে তাকিয়ে আছে। নিশা রিমনকে ছাড়িয়ে বলল, এখান থেকে চল। লোকজন তাকিয়ে আছে।


পার্কের বেঞ্চটায় রিমন বসে আছে। আর নিশা সামনে দাঁড়িয়ে। মাঝে অল্প একটু ব্যবধান। রিমনের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে নিশা।
- এখন একটু ভাল লাগছে?
- হ্যাঁ।
-এই, এতো ভালবাসতে হয়?
- হয়। আমি তোমাকে ভালবাসি। আমি তোমাকে হারাতে চাই না নিশা।আমার মনে হচ্ছিল আমি মরে যাচ্ছি। জ্ঞানশুন্য হয়ে যাচ্ছি। তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি।


নিশার হাতটা শক্ত করে ধরে বলল, আমাকে ছেড়ে যাবে না তো কখনও?
- পাগল তুমি? এতদিন আমি এই কথা বলতাম। আজ তুমি?যাব না যাব না।ভালবাসি অনেক।
- সবুজ শাড়িতে তোমাকে সুন্দর লাগছে।


লাজুক মুখে নিশা রিমনের দিকে তাকাল।কি একটা ঘটনা ঘটে গেল। আসলে যা হয় ভালোর জন্যই হয়।আজ নিশা লেগুনায় চড়েনি। হেঁটে এসেছে।রিমন ব্যাপারটা না বুঝুক এটা চাচ্ছিল নিশা। তাই হেঁটে হেঁটে মাঝ পথে এসে কল করেছিল রিমনকে। বলেছে লেগুনায় চড়ছে।আর মাঝে কল করতে মানা করেছে কারণ কথা বললেই রিমন বুঝে যাবে নিশা লেগুনায় না।তাও যদি কল করে, তাই মোবাইল অফ করে রেখেছিল।আজ রিমনের জন্মদিন, কিছু না দিলে হয়?কিন্তু হাতে টাকা নেই।লেগুনায় না চড়লে হাতে ১০ টাকা থাকবে। আর এই ১০ টাকা দিয়ে ২ টা গোলাপ কিনেছে। গোলাপ কিনে আসবার সময় রাস্তার পাশে অনেক মানুষের ভিড় দেখে নিশা যায়।গিয়ে দেখল,রিমন ওখানে কি যেন খুঁজছে পাগলের মত। পরে রিমনের থেকে জানল একটা লেগুনা এক্সিডেন্ট করেছে।
নিশার হাত এখনও রিমন ধরে রেখেছে। হাতটা ছাড়িয়ে নিশা ব্যাগ থেকে ২ টা গোলাপ বের করল।রিমনকে দিয়ে বলল,
- শুভ জন্মদিন। আসলে বুঝই তো, পরিবারের কি অবস্থা।বাবার হাতে টাকা নেই। আর আমার কাছেও জমানো টাকা নেই। তাই এর থেকে বেশি কিছু দিতে পারলাম না, সরি জান।


রিমন নিশার হাত থেকে গোলাপ ২ টা নিয়ে একটু হাসি দিয়ে বলল, এর চেয়ে বেশি কিছু লাগে না। এতো সুন্দর উপহার দিলে,ভালবাসা দিলে ,আর সবচেয়ে বড় কথা, সবচেয়ে বড় উপহার হিসেবে তোমাকে পেলাম। নতুন করে পেলাম। আমি ভেবেছিলাম তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি।নতুন করে তোমাকে পেলাম। এর চেয়ে বড়, এর চেয়ে দামী উপহার আর আছে? আর পেয়েছি যখন, সারাজীবন পাশে থাকতে হবে। আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারবে না।


নিশার চোখ বেয়ে পানি পড়ছে, খুশিতে। এতো ভালবাসার খুশিতে।বাবা কাল টাকাটা দিলে হয়ত আজ লেগুনা এক্সিডেন্টে মারা যেতে হত নয়ত হাত পা ভেঙ্গে বসে থাকত। আমরা ঘটনা ঘটে যাওয়ায় কষ্ট পাই, দুঃখ পাই সেই সময়টাতে। আসলে একটু ধৈর্য ধরলেই খুঁজে পাওয়া যায়, আসলে সব কষ্টের আড়ালে সুখ আছে। সব খারাপ কিছুর আড়ালে ভাল কিছু আছে।খুঁজে নিলেই পাওয়া যায়।
রিমন নিশার হাতটা আবার শক্ত করে ধরল।মায়াময় চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, নিশা একটু জড়িয়ে ধরি তোমাকে?
- ধর।


রিমন নিশাকে জড়িয়ে ধরল।নিশার গাল বেয়ে পানি পড়ছে।এতো ভালবাসা হাতের কাছে পেয়ে।এই ভালবাসায় আস্থা আছে। এই ভালবাসায় বিশ্বাস আছে। নিশা জানে, যত যাই হোক ওর বাবা মা যেমন নিশাকে কখনও ছেড়ে যাবে না।কাল থেকে এই ভালবাসা খুঁজে পেয়েছে।বাবা মায়ের ভালবাসা।ঠিক তেমনি রিমনও কখনও ছেড়ে যাবে না নিশাকে।নিশা জানে, বিশ্বাস করে।অবিশ্বাসে ভালবাসা হারিয়ে যায়।বিশ্বাসে ভালবাসা গভীর হয়,সব হারালে তবুও ভালবাসা থাকে। 

আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি

একটা সময় মনে হয় আমি তোমাকে বলি যে "আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। সত্যি তোমাকে আমি অনেক ভালবাসি। আল্লাহর রহমতে আমি তোমেকে সুখে রাখব, সুখী করতে চেষ্টা করব। তোমাকে আমার জীবনে চাই, আমার মনের কুঠরীতে আমি তোমার জন্য তাজমহল গড়ে রেখেছি। তুমি না, বলো না আমাকে। আমি আমার সব কিছু সঠিক ভাবে চালিয়ে নিতে পারব আল্লাহর রহমতে। তুমি আমার পাশে থেকো আমার হাতটি ধরে। আমি তোমার মত করেই চলব। আমার জীবনটা আরো গুছিয়ে ঊঠবে তোমাকে পাশে পেলে। সত্যি তোমার জন্য আমার ভালবাসা হৃদয়ের গভীর থেকে এসেছে।"
আমি কেন বলতে পারি না আমার সমস্ত কল্পনা আমার সমস্ত বাস্তব শুধুই তুমি। এই সত্যের মুখোমুখি আমি হতে পারছিনা। শুধুই ভয় হয় কারন তুমি যদি না বলে দাও, তাহলে আমি !!!! তুমি খুব সুন্দর ভাবে আমাকে না বলে দিবে আমি জানি, কিন্তু আমি জানি তোমার না বলার পরে আমার কি হয়ে যাবে, যা হয়তো তুমি জান না। বুশরার সাথে আমার যা হয়েছে তা শুধু একটা ভুল তা কখনো ভালবাসা নয়। যার জন্য হয়তো আমি আমাকে মানিয়ে নিতে পেরেছি। কিন্তু তুমি অনেক আলাদা। তোমার জন্য আমার মন থেকে যা আসে তাকে ভালবাসা বলে। তবুও আমি তোমাকে বলার সাহস পাচ্ছি না, আমি তোমাকে কতটুকু ভালবাসি !
মনে হয় এই পৃথিবীতে আমি তোমাকে নিয়ে এতো চিন্তা করি যা তোমার জন্য অন্য কেউ করবে না। আর আমার এই চিন্তা ভাবনা আপনা আপনিই এসেযায়। তোমার জন্য আমার ভালবাসা হল রিকয়ারমেন্ট আর বাবা মা তাদের টা হল অভিডিয়েন্ট। কিন্তু তোমাকে আমার মন থেকে কখনো সরাতে পারতেছি না। আমি জানি তোমাকে আমি কখনোই পাব না। তাইতো আমি তোমার নাম দিয়েছি কল্পনা। কিন্তু তুমি জান না তুমিই হচ্ছো আমার কল্পনা।
ভাল বন্ধু যদি জীবন সঙ্গী হয় তাহলে জীবনে চলার পথে সব বাধাই তো অতিক্রম কার যায়। তুমি মানে কর যে তুমি আমাকে বুঝ না কিন্তু তুমি আমাকে যতটুকু বুঝ তার পরেতো আর কিছুই বাকি থাকে না। কিন্তু আমি তোমাকে বুঝেও অনেকটাই বুঝি না,যা তুমি কিছুদিন আগে আমাকে বলেছিলে, আমার আজ মনে হচ্ছে তুমি সত্যিই বলেছ, তুমি আমাকে ভালবাস কি না আমি শুধু তাই বুঝি না। তাছাড়া আমি তোমার সব কিছুই বুঝি, কেনই বা বুঝব না বল ? যাকে নিয়ে সারাক্ষন ভাবি, যে সারাক্ষন আমার মনে বসত করে তাকে তো একটা সময় আপনা আপনি ই বুঝা হয়ে যায়।
তবুও আমি তোমাকে বলতে চাই না আমি তোমাকে অনেক ভালবাসি। কি পাবে আমার কাছথেকে তুমি? কিছুইতো নাই আমার। একটা ভাল মন আর ভাল একটা ফেমিলি ছাড়া আর কিই বা আছে আমার তোমাকে দেবার। আর এই দুইটা মাত্র হাতিয়ার নিয়ে আমি তোমার বিশাল ভালবাসার দরবারে কিভাবে বলব আমি তোমাকে ভালবাসি।............
আমি যে খুব দরিদ্র।
থাকনা আমার ভালবাসা আমার কাছেই। কিন্তু তুমি আমার মনের বাড়ির সবটাই দখল করে আছ। আমার জীবনে মনে হয় আর কখনো তোমার মত মেয়ে আসবে না। আর আমি চাইও না। সারাজীবন আমি তোমাকে অপ্রকাশিত ভাবে ভালবেসে যাব মাঝে মাঝে কিছু কান্না থাকবে আমার যা হয়তো খুব লুকানো।
আমার জীবনে কোন গোপন নাই যা আমি তোমার কাছে বলিনি। হয়তো তোমাকে মনে প্রানে ভালবেসেও তোমাকে না বলাটাই একমাত্র গোপন থাকল। যদি তুমি আমাকে একটি বারের জন্য বুঝাতে পার যে তুমিও আমাকে ভালবাস,তখন আমি আর দেরি না করে তোমার কোমাল সেই মুখের দিকে তাকিয়ে এবং তোমার জলজল ছলছল দুইটি চোখের পানে আমার ভালবাসা পিপাসু দুটি চোখ রেখে বলে দিব "আমি তোমাকে ভালবাসি এবং তুমিই আমার কল্পনা।
আমি জানি তা কখনও করবে না। দুনিয়ার সব মেয়েদের মত তুমিও হয়তো চাও তোমার ভালবাসার পুরুষের অর্থ টাকা পয়সা ধন সম্পদ থাকবে।
থাকনা এইসব কথা........................। এই সব কথা আমি কেন বার বার মনে করতেছি। তুমি ভাল থাক আমি সেটাই চাই, যেখানেই থাক না কেন।।। কিন্তু আমি তোমাকে অনেকটাই বঝি, সো- তুমি যদি কখনো অন্যের হাতধরে, অপর এক পুরুষকে ভালবেসে কষ্ঠে থাক( আল্লাহ কখনো যেন তা না করে আর আমিও তোমার কষ্ঠ সইতে পারি না)। তা হয়তো তুমি আমাকে বলবে না কিন্তু আমি তা বুঝতে পারব আর তা আমি সয্য না করতে পেরে আরালে লুকিয়ে থাকব আর কাদঁলেও গোপনে কাদঁব। "''তোমাকে প্রচুর ভালবেসেও তোমাকে না বলে আরাল হয়ে থাকা আর সেদিনের লুকিয়ে গোপনে কাদাঁ''''এই দুইটা কথাই তোমার কাছে আমি গোপন করব। তাছাড়া আমার সব কিছুই তুমি জানবে কারন তুমি যে আমার অনেক কাছের, অনেক ভাল একটা বন্ধু। আমি তোমাকে অল্প নয় অনেক বেশি সুখী দেখতে চাই।

ღ_নিঃস্বঙ্গ চোখেরজল লুকাই কি করে_ღ

যখন কেউ ভালোবাসার মানুষটার সাথে থাকে তখন সবারই খুব ভালোলাগে... তখন কেউ এটা ভাবেনা যে এই মুহূর্ত গুলো একটু পরেই অতীত হয়ে যাবে, আর রয়ে যাবে স্মৃতির পাতায়.. যতদিন সে সাথে থাকবে এই স্মৃতি গুলো হাসাবে,আর যখন সে থাকবেনা তখন এই স্মৃতিগুলোই আবার কাঁদাবে..... ............!!
Love
তোমার কাছে আমার কোন প্রশ্ন নেই। তুমি আমার স্বপ্ন কেন ভাগলে। আমি জানতে চাই মানুষ কেন এত বদলায়।সেই তুমি কেন এত স্বার্থ পর হলে। হয়ত পৃথিবীর কাছে তুমি কিছু না।কিন্তু কার ও কাছে তাহার পৃথিবীর চেয়ে তুমি অনেক বড়ও।তোমার জন্য আমি আর কাঁদিনা।কাঁদলে ও চোখের পানি ঝরেনা।চুকের পানি ঝরলে কষ্ট হয় না।
আমায় দেখা তুমি ওকাঁদবে বিস্ময়ে,
আমায় দেখা তুমি ও কাঁদবে বিস্ময়ে, গতির অভাবে সুখ থেমে যাবে না তোমার । হাত বারালে সঙ্গির অভাব হবে না, আমায় হয়তো আর খুঁজে পাবে না । দিন যাচ্ছে আজ একা একা এই আমার, অস্রু সাথি হবে দেখ একদিন তোমার । থাকবে সবাই তোমার পাসে সারা বেলা, খুজে পাবে না হয়ত এই আমায় কোন বেলা । আছি দূরে কষ্ট নিয়ে আজ সুখে আছ তুমি, তোমার আকাশ সুনিল আর আমার মুরুভুমি .........
যখনি আম?
যখনি আমি থাকি পড়ার টেবিলে, তোমার নাম লিখতে লিখতে হাত ক্লান্ত হয়, তবু মন ক্লান্ত হয় না, তোমার নামের প্রতিটি শব্দের মায়া জালে আমি হারিয়ে যাই । যখনি আমি থাকি পিসির সামনে, তোমার ছবি দেখতে দেখতে ছবি শেষ হয়ে যায় কিন্তু মন ভরে না ...... ভীষণ ভাবে তোমাকে পড়ছে মনে ।।
অনুভব
অনুভবে স্বল্পতা যখন এক মুহূর্তের বাস্তব নির্মমতার সংস্পর্শে আসে , তখন অর্থহীন জীবনের বহমানতায় একটি নতুন অধ্যায় যুক্ত হয় । একফোঁটা হাসি , দুই মুঠো স্বপ্ন , কয়েক ফোঁটা অশ্রুর বিষাদ , এক মুহূর্তের ছন্নছাড়া আবেগ- অধ্যায় শেষ হয় নতুন অধ্যায়ের সুচনা হয়- গল্প চলতে থাকে । অনিঃশেষ ছন্নছাড়া এক জীবনের গল্প ।
বন্ধুকে ভালবাসার মানুষের জায়গায় বসানো যায়.??
বন্ধুকে ভালবাসার মানুষের জায়গায় বসানো যায়... কিন্তু ভালবাসার মানুষকে কখনও শুধু বন্ধু হিসেবে মেনে নেয়া যায় না! আবার ভালবাসার মানুষ খুব সহজেই সবচেয়ে ভালো বন্ধু হতে পারে... উক্তি:সকল ভালবাসার মানুষই বন্ধু কিন্তু সকল বন্ধু ভালবাসার মানুষ নয়!!!
ভালবাসা কি জানো??
ভালবাসা কি জানো?? আমি জানি, আমার কাছে ভালবাসা হচ্ছে তুমি। আবেগ কি জানো? আমি জানি, আমার কাছে আবেগ হলে তুমি। মায়াতে কিভাবে জড়ায় জানো? আমি জানি, যেভাবে তুমি আমার জীবনের সাথে জড়িয়ে গেছ। সুখ কি জানো? আমি জানি, তুমি যখন হাসো তখন আমার সুখ। আমি জানি তারপরে ও তুমি বল আমার ভালবাসার কমতি নাকি আছে। আমি জানি আমার ভালবাসা আজও অসম্পূর্ণ। কেন জানো? কারন তুমি এখনো আমায় আমার মতো করে ভালবাসতে পারনি ..... !!!
☼Valobashar Canvas
স্বর্নালী গুধলীতে পাখীদের নীড়ে ফেরা এখন আর আমি দেখি না মাঝ রাতে ঘুম হারা- কবিতার বই পড়া এখন আর ভাল লাগেনা এ জীবন ঝরা পাতার মত ডালে ডালে ফুল ফুটেনা তুমি নেই বলে আদারে আর আলো আসে না !
☼তোমায়ভালোবাসি
যেদিন থেকে ভালবাসাতে শিখেছি সেদিন থেকে আনন্দ কি জিনিস তা চিনেছিলাম ! আর... যেদিন তুমি আমাকে ছেড়ে চলে গেছো সেদিন বুঝতে পেরেছি আনন্দ ক্ষণস্থায়ী হলে কষ্ট কত দীর্ঘস্থায়ী হয় !!!
☼ অবুজ মন
কষ্টে ভরা জীবন আমার , দুঃখ ভরা মন , মনের সাথে যুদ্ধ করে আছি সারাক্ষন ... তারার সাথে থাকি আমি , চাঁদের পাশাপাশি , আজব এক ছেলে আমি দুঃখ পেলেও হাসি ......
☼হয়তো তুম....
হয়তো তুমি আমাকে ভুলে যাবে ভুলে যাবে সেই সোনালী প্রহরে আবেগঘন স্মৃতিগুলি। যা তুমি আমি সাজিয়েছিলাম একান্তই নিজের মতো করে। হয়তো তোমার হৃদয়ের বারান্দাতে অপেক্ষমান দেখবে না সেই চিনচেনা আমাকে। হৃদয়ের দরজাতে আর কড়া নেড়ে বলা হবেনা "এই মেয়ে/ছেলে জানো! আজো ভালোবাসি তোমাকে"! হয়তো পাতাগুলি আলতো করে একের পর এক ডান থেকে বামে যাবে। হৃদয়ের ঘুমন্ত ক্ষতগুলি জ্রাগত হবে সমানুপাতিক হারে জমাট বেদনাতে রক্তক্ষরণ হবে জরুরী কোন এক সীমান্তে এসে থমকে দাঁড়াবে সকল অনুভুমি। সেখানে নেই আর তুমি আছে বিস্তৃত সাদা মাঠ আর বুক ভরা হাহাকার .............
☼ভালবাসা ফুরিয়ে যায় ,
বল ‍"ভালবাসি"! একটা তাজমহল হয়তো বানাতে পারব না, তবু গড়বো বাবুই পাখির মত ছোট্ট সুখের এক নীড়। শুধু একবার হাসো আমার পানে চেয়ে! আকাশের ঐ চাঁদটা হয়তো এনে দিতে পারব না, তবু চাঁদনী রাতে সেই হাসির সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হব। শুধু একবার কাছে ডাকো আমায়! সাত-সমুদ্র তের- নদী হয়তো পাড়ি দিতে না, তবু ছুটে আসব তোমার হৃদয়ের আহবানে সাড়া দিতে। শুধু একবার আসো আমার সাথে! এভারেস্ট কিংবা মঙ্গলে হয়তো ন না, তবু দেখাব তোমায় আমার হৃদয়ে থাকা অজস্র স্বপ্নের পাহাড়। শুধু এক টুকরো ভালবাসা দাও আমায়! প্রতিদানে হয়তো তেমন কিছুই দিতে পারব না, তবু সেই ভালবাসা ধরে রাখব জীবনের শেষ নিশ্বাসটি পর্যন্ত। আজ আর কিছুই বলবো না তোমাকে। শুধুবলবো তোমাকে খুব বেশি ভালবাসি। যার শেষ হয়তো কখনো হবে না। [♥]
☼আমার পৃথিবীটা কে আমার মত করে সাঁজাতে দাও
ভালোবাসি তোমায় সত্যি কি মিথ্যা জানি না; ভালোবাসি তোমায় পাব কি পাব না তা নিয়ে ভাবি না; ভালোবাসি তোমায় হৃদয় জানে তুমি জান না; ভালোবাসি তোমায় নীল আকাশে তুমি তোমায় ছোঁয়া যায় না; ভালোবাসি তোমায় ছায়া হয়ে থেকো তুমি কী পারবে না???
☼ভালবাসা ফুরিয়ে যায় ,গল্পগুলো রয়ে যায়
যখন তোমায় নিয়ে ভাবতে বসি তখন আমার পৃথিবীটা সেখানেই থমকে যায়। মনে একটা প্রশ্ন জাগে তুমি কি সেই তুমি যার জন্য আমার অস্তিত্ব বিলীন করতে ও দ্বিধা করি নি ? ভাবতেই অবাক লাগে কি পেয়েছ আমায় এই অবিরাম কষ্টের সাগরে ভাষিয়ে । হয়তো অনেক কিছুই নয়তো কিছুই নয় । আচ্ছা বলতো তুমি কি পারবে অন্য কাউকে সুখী করতে ? মনে হয় পারবে । তা না হলে কি আমার হাতটি ছেড়ে দাও অন্য একটি হাত ধরবে বলে । জানো তুমি চলে যাওয়ার পর এখন সব কিছুই অচেনা মনে হয় । কাউকেই আর সহজে বিশ্বাস করতে পারি না । হাসতে ও পারি না আগের মতো । নীরবতা আর একাকীত্বে ভরপুর আমার জীবন । চারপাশ টা এখন ভেলা ভূমি ছাড়া আর কিছুই মনে হয় না । তোমার স্মৃতি গুলো প্রতিনিয়ত আমায় কাঁদায় । তবে ভেবো না আর বেশী দিন তোমার জন্য কান্না করতে হবে না । কারন খুব কাছ থেকেই দেখছি কিভাবে জীবন প্রদিপ নিভে যাচ্ছে । সত্যি ই খুব মিস করবো তোমায় । আচ্ছা একটা কথা বলবে কিভাবে এ পাতা থেকে অতীত কে মুছে ফেলতে পেরেছো ? এতোটা স্বার্থপর কিভাবে হয়ে গেছো । ও বিরক্ত হচ্ছ । আচ্ছা বিরক্ত করবো না । ভালো থেক
☼ღ কি করে ভুলিব তোমায় ?
আমি চাইনি তুমি কখনো কষ্ট পাও, আমি চেয়েছি তুমি সুখী হও, তাইতো কোনো অভিযোগ করিনি অকারনে চলে গেছো বলে, আমি চাই আমার ভালবাসার মানুষটি সুখে থাকুক যেইখানেই থাকুক, কারন ভালোবাসা মানেতো সুখের নীড়, তাই আমার ভালোবাসা আমাকে যতই কষ্ট দিক, আমি চাই তার বিনিময় যেন সেই সুখে থাকে, আর তার সুখই আমার সুখ ...
☼Sopnno
আমি আমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখি না, স্বপ্ন দেখি তোমায় নিয়ে, আমি আমায় নিয়ে ভাবি না, ভাবি শুধু তোমায় নিয়ে, আমি আমাকে ভালবাসি না,ভালবাস আমি আমার নিজের থেক্কেও বেশী তোমায় ভালবাসি,আর সেই কি তুমি বলছ তোমায় ভুলে যেতে ?
☼Valobasha mane i kostt
ভালোবাসবো না, বাসবো না করেও ভালোবেসে ফেললাম তোমাকে আরেকবার. . ! শুনবো না শুনবো না করেও ফোনটা কানে চেপে ধরি তোমার হ্যালো শুনবো বলে. ! আমার কষ্ট হলে যার চোখে পানি চলেআসে,তাকে ভালো কোন কারণনেই।। তবুও মনের গহীনে গোপনে ভালোবেসে যাই।। ♥ অসংখ্য ভালোলাগা যেখানে ছড়িয়ে আছে,য স্পর্শ পেলে জীবনটাকে সার্থক মনে হয়, তাকে সারাজীবন কাছে পেতে তার সাথে খানিকতা ঝগড়া অভিমান ও মধুর লাগে।।:@ তাকে ছাড়া আমি ভাবনার বাইরে,সৃষ্টিকর্ তার কাছে একটাইপ্রত্যাশা, তিনি যেন আমাকে তার সাথে মিলিয়ে দেন এইজীবনে. . .
☼Moner jala
তুমি দরজা নাও খুলতে পারো আমি কি পাখি যে সারারাত ভাঙ্গাগলায় তোমাকে ডাকতে পারবো, আমি কি নদীর ঢেউ যে আছড়ে পড়তে পারবো তোমার দুয়ারে এসে, এমন কি কেউ যে অবিরাম করাঘাত করতে করতে চেনা কণ্ঠে বলতে পারবো, দরজা খোলো;
☼kotha daw
কথা দিলাম আমি আসব… কোন একদিন আবার ফিরে… সহস্র ভালবাসা আর প্রেমের জোয়ারে… তোমার জীবনকে কানায় কানায় ভরিয়ে দিতে… আমার প্রতিক্ষায় থেকো চেয়ে… অসিম নীল আকাশের দিকে… সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলে প্রদিপের আলো নিয়ে… বাতায়নে থেকো দাড়িয়ে… তুমি অপেক্ষা করো … বৃষ্টির পরে ,আমার চলে যাওয়া সেই পথে… আমি আসব…দেখো… কথা দিলাম আমি আসব…♥
☼mone pore jodi
একটা কথা রাখিস.... যদি কখনো কান্না পায় আমায় একটু ডাকিস...। হাসতে চাই না তোর সুখেতে তোর দুখেতে কাঁদতে দিস....। দুখের দিনে মেঘলা মনে পড়বি যখন একলা হয়ে.... আমায় একটু মনে করিস....। কেউ রবে না যখন পাশে দু'চোখ যখন ঝাপসা হবে আমায় তখন একটু ডাকিস.... চোখের জলটুকুন মুছতে দিস...।
☼Akta sele ar akta meye
ছেলে এবং মেয়ে বন্ধু হতে পারে, কিন্তু তারা অবশ্যই একে অপরের প্রেমে পড়বে। হয়ত খুবই অল্প সময়ের জন্য, অথবা ভুল সময়ে। কিংবা খুবই দেরিতে, আর না হয় সব সময়ের জন্য। তবে প্রেমে তারা পড়বেই...
☼Valobashi tomake
¤আজ তোমাকে ভালোবাসি বলতে ভয় করে, যদি ছেড়ে চলে যাও। ¤আজ তোমাকে ভালোবাসি বলতে ভয় করে, যদি বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যায়। ¤আজ তোমাকে ভালোবাসি বলতে ভয় করে, যদি কষ্ট পাও। ¤আজ তোমাকে ভালোবাসি বলতে ভয় করে, যদি ভুলে যাও। ¤আজ তোমাকে ভালোবাসি বলতে ভয় করে, যদি ফিরিয়ে দাও। ¤আজ তোমাকে ভালোবাসি বলতে ভয় করে, যদি নীরবে কাঁদো।
☼Volobasha
এমন একজনের হাত ধরুন... যে সত বিপদে ও আপনার হাত ছাড়বে না.. এমন একজনকে আপনার... যত্নে লালন করা হৃদয়টা দেন.. যে কখনই আপনার সেই... হৃদয়টা ভাঙ্গবে না.. তাকেই ভালোবাসুন... যে অন্য কেউকে কখনই ভালোবাসবে না.. আপনাকে ছাড়া.......
☼Ami jani tomake ar pabona
আমি জানি তুমি কখনো আর আমারহবেনা, কারন তোমার কাছে স্বার্থের মূল্য বেশি, সার্থের জন্য যে কাউকে তুমি বলতে পারো ভালো দয়া করে সার্থের জন্য কারো মন ভালোবাসা জীবন নিয়ে খেলোনা, তোমার এই ছোট্ট ভুলে এমনকি একটা জীবনের ইতি হয়ে যেতে পারে, কারন ভালোবাসা বিশ্বাস দিয়ে শুরু হয়....
Valobashar rag
আজ আর কারো প্রতি কোনো রাগ অভিমান নেই। বোবা চাপা কষ্টগুলোও হয়তো আর সহ্য করতে হবেনা। আজ না ফেরার দেশে পারি জমাতে ইচ্ছা করছে। তোমাকে পাবোনা বলে বলছি না নিজের হেরে যাওয়াটাকে মেনে নিতে প কাল সকালের আলো আর দেখবনা হয়তো। অন্ধকারটাকে আপন করে নিলাম। ভাল থাকব বলে ......
আজ আর কারো প্রতি কোনো রাগ অভিমান নেই। বোবা চাপা কষ্টগুলোও হয়তো আর সহ্য করতে হবেনা। আজ না ফেরার দেশে পারি জমাতে ইচ্ছা করছে। তোমাকে পাবোনা বলে বলছি না নিজের হেরে যাওয়াটাকে মেনে নিতে প কাল সকালের আলো আর দেখবনা হয়তো। অন্ধকারটাকে আপন করে নিলাম। ভাল থাকব বলে ......
I Miss you
আজ কেন যেন তোমাকে খুব miss করছি...তুমি আমার জীবনে এসে ছিলে পৃথিবীর সকল সুখ নিয়ে আর আজ তুমি পৃথিবীর সকল কষ্ট আমার বুকে দিয়ে একা করে চলে গেলে...ত বলে তুমি আমার জন্য কেঁদোনা , তোমায় ছাড়া আমি খুব সুখেই আছি। আগে তোমায় নিয়ে ভাবলে খুব ভালো লাগত, আর এখন তোমায় নিয়ে ভাবলে কেন যেন দু'চোখ দিয়ে অশ্রু ঝড়ে পড়ে...আগে তোমায় দেখলে আমার সকল ব্যাথা চলে যেত আর এখন তোমায় দেখলে খুব কষ্ট লাগে . দু'চোখের অশ্রু ধরে রাখতে পারি না...এটাই কি ভালোবাসার প্রতিদান ????
ভালোবাসার নীল কাব্য
গুগল কোনদিনও খুঁজে পাবে না কতটা ভালবেসেছিল তোমায়। তোমায় হারিয়ে আমার পার করে আসাসে বেদনার ইতিহাস আজো জানে না উইকিপিডিয়া। ভগ্ন সে হৃদয়ের নিষ্প্রান দৃশ্য তুমি পাবে না খুঁজে গুগল ইমেজে। রাতের পর রাত জেগে তোমায় লেখা সে চিঠির আমার কোন হিসেব রাখেনি ইয়াহু মেইল। একাকী তোমার সাথে কত কথা বলে গেছি, সে সব পাবেনা খুঁজে টুইটারে সার্চ দিয়ে। আনমনে তোমায় ভেবে আমার সে করুন রোদন দেখতে পাবে না কখনো ইউটিউবে করে। যে ভালবাসা দিয়েছিলাম তোমায় তার লিংক আর কখনো পাবে না গুগল ক্রোম দিয়ে ব্রাউজিং করে। ভাল থেকো।
Sopnno
বাসে ওঠার পর দেখলাম বাস ভর্তি খালি সুন্দরী মেয়ে। প্রত্যেকটা সিট এক একটা সুন্দরী দখল করে বসে আছে। দুই কলামের সিটের মাঝে যেই জায়গা টুকু, সেখানে অভাগারা দাঁড়িয়ে থাকে আমি আজ অভাগাদের দলে নাম লিখিয়ে এখানে দাঁড়িয়ে রইলাম। পরক্ষণেই হুড়োহুড়ি করে আরও পাঁচ- ছয় জন মেয়েএসে দাঁড়ালো আমার সামনে। এত সব মেয়ের মাঝে নিজেকে মাছের কাটার মতো মনে হয়। কত দিন কত মেয়েকে নিজের সিটে বসতে দিয়েছি, তার হিসেব নেই।আজকে কেও আমাকে বসতে দিচ্ছেনা, এইটা মোটেও ভালো কথা নয়। পেছন দিক থেকে একজন আমার নাম ধরে ডাকলো। তাকিয়ে দেখি এক অনিন্দ্য সুন্দরী হাসি হাসি মুখে তাকিয়ে দিকে। কাছে গেলে বললো, “আপনি মেয়েদের বাসে উঠেছেন যে?” আমি বিস্ময় বোধক দৃষ্টি ফেলে বললাম, “এই শহরে মেয়েদের জন্য আলাদা বাস আছে নাকি?” সুন্দরী একটা হাসি দিয়ে বললো, “না মানে আমাদের কলেজ থেকে আমাদেরকে সমুদ্র দেখতে নিয়েযাওয়া হচ্ছে। আজকের জন্য এইটা একটা প্রাইভেট বাস”। আমি করুন মুখে বললাম, “ও আচ্ছা! তাহলে তো আমাকে নেমে যেতে হয়! বাস ড্রাইভার কর্কশ স্বরে বললেন, “নামেন মিয়া! ফাইজলামির আর জায়গা পান না?” আমার নামতে খুব খারাপ লাগছে। মনে হচ্ছে জান্নাতের ৭০ জন মহা সুন্দরী হুরের মাঝ থেকে কেও আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিচ্ছে। ভাবতে না ভাবতেই মোটা- তাজা ড্রাইভার এসে আমার শার্টের কলার ধরে টেনে বাস থেকে ফেলে দিলেন। ৭০ জন সুন্দরীর খিল খিল করে হাসির শব্দ বাসের কালো ধোয়ার সাথে মিশে গেল। আমি কটকটে রোদে কালো রঙের পিচ ঢালা রাস্তায় একা দাঁড়িয়ে রইলাম।হঠাৎ পেছন থেকে কেও একজন কান টেনে ধরে বললেন, “নওয়াবজাদার নাওয়া নাই, খাওয়া নাই, সারাদিন খালি ঘুম!” ঢুলুঢুলু চোখে তাকিয়ে দেখি, সিলিং ফ্যানের পাখা তিনটা ভন ভন করে ঘুরছে। এভাবেই প্রতিনিয়ত কত স্বপ্নের সমাপ্তি ঘটে সিলিং ফ্যানের তিন পাখায়...
Kotinkaj
পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কিছু সত্য হল... ০১) আপনি এমন কাউকে ভালবাসেন যে আপনাকে শুধু ই ঘৃণা করে ০২) আপনি এমন কাউকে মিস করেন যে আপনাকে মিস করার সময় খুঁজে পায় না ০৩) আপনি এমন কাউকে ভাবেন যার কল্পনাতেও আপনার কোন অস্তিত্ব নেই ০৪) আপনি এমন কারো জন্য কাঁদেন যার কিনা আপনার এক ফোঁটা চোখের জল মুছে দেয়ার সময় পর্যন্ত নাই তবে সব থেকে কষ্টের মুহূর্ত হয় তখন যখন আপনি এমন কাউকে এত বেশি ভালবাসেন যে অন্তত একটা বার একটা মুহূর্তের জন্য হলেও ভুল করে হলেও আপনাকে একটু ভালবাসার প্রয়োজন অনুভব করে না....
ভালবাসা?
একটি তরুণী মেয়ে যদি হঠাৎ কোনো ছেলেকে এসে বলে, "আমি তোমাকে ভালবাসি। তোমাকে না পেলে আমি বাঁচব না।" তখন ছেলেটির মানসিক অবস্থা কি হয়? সে আনন্দে আত্মহারা হয়। কিছুক্ষণ সে থাকে On the Top of the World. তারপর সে চারদিকে এই গল্প ছড়িয়ে দেয়। পরিচিত অপরিচিত সবাই এই গল্প কয়েকবার শুনে ফেলে। যারা আসে পাশে থাকেনা তাদেরকে মেস দেয়, "তুমি শুনে খুব আশ্চর্য হবে, লিলি নামের এক অত্যন্ত রূপবতী তরুণী গত বৃহস্পতিবার বিকাল চারটা পঁচিশ মিনিটে হঠাৎ করে...." যুবকটি এই গল্প যতই ছড়াতে থাকে ততই তার আবেগ কমতে থাকে। ঘটনার নভেলটি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায়। সে তখন অপেক্ষা করতে থাকে কখন অন্য কোনো তরুণী তাকে এসে এ জাতীয় কথা বলবে। মেয়েদের বেলায় এই ব্যাপারটি একেবারেই ঘটেনা। কোনো তরুনীকে যদি কোনো যুবক এসে বলে, "আমি তোমাকে ভালবাসি, তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচব না।" তখন তরুণী আনন্দে আত্মহারা হয় না, বরং খানিকটা ভীত হয়ে পড়ে। সে এই ঘটনা কাউকেই জানায় না। যে কারণে ঘটনাটা তার মনের ভেতরে বড় হতে থাকে। সে প্রাণপণ চেষ্টা করে পুরো বিষয়টা মাথা থ মুছে ফেলবার। যতই সে চেষ্টাকরে, ততই এই ঘটনা শিকড় গজিয়ে বসতে থাকে ।একসময় তরুনীটির মনে হয়, "আহারে বেচারা! সত্যিই বোধহয় আমাকে ছাড়া বাঁচবে না।" একসময় সে 'আহারে বেচারা' কে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করে।
Meye
সুন্দরীদের জন্য খারাপ খবরঃ ক্লাসে, রাস্তায় কিংবা মামাতো/খালাতো/­ ফুফাতো ভাইরা আপনাকে অনেক "দাম দেয়"। আপনি নিজেকে গর্বিতও মনে করেন যখন অন্য যুবক আপনার পানে ফ্যাল-ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে আপনার ওজনতখন হালকা হয়ে যায় - আপনি আকাশে উড়তে থাকেন। মাটির স্পর্শ ভুলিয়ে দেয় আপনার অহমিকার তেজ! কিন্তু জানেন কি? মেয়ে মানুষ দুইপ্রকার... ১. প্রেম করার উপযোগী। ২. বিয়ে করার উপযোগী। সুন্দরীগন প্রথম শ্রেনীভুক্ত - অনলি ফর ফ্লাটিং! তাহারা শুধু ব্যবহৃৎ হন - সাময়িক মনোরঞ্জন (হোকনা সেটা দৃষ্টিসুখ না হয় আরেকটু বেশি!) খুব কম মানুষই যেনেশুনে তাদেরকে ঘরে তোলেন। ঠিক যেমন শো-রুমে ডিসপ্লে ডল এ সাজানো জামা পছন্দ করে দোকানের আলমারীতে রাখা আনকোরা ভাঁজ না খোলা জামা কিনে আনার মতই... যখন ইস্যু আসে বিয়ে বিষয়ে, তখন সবপুরুষের পছন্দই কিন্তু সুশীল, কমদেমাগী, শান্ত ভদ্র মেয়েটির দিকে। এমনকি ছেলের মা (যিনি নিজেও একজন নারী) ও এমন মেয়েকে তার ছেলে বউ হিসেবে খোঁজেন। জ্বি! আপনার মনে হতে পারে "লোকটার মানসিকতা কত নিচু দ্যাখ! কিভাবে লিখছে সুন্দরী মেয়েদের অপমান করে!!!" বুকে হাত দিয়ে বলুনতো সানি লিওন কিংবা শবনুর অথবা আপনার এলাকার জিন্স প্যান্ট আর টাইট টপস্ পরে হাইহিলে টপক টপক হেটে যাওয়া জুলিআপুকে আপনার বিয়ে করতে ইচ্ছে হয়েছে? ____ সুন্দরীদের বলছিঃ স্টাইল এবং টাউটগিরি সম্পুর্ন ভিন্ন জিনিস! সময়ের সাথে চলা স্টাইল - আর সময়ের আগে চলা হলো টাউডারী! জীবনকে উপভোগ করার মানেই উগ্রতা নয় - শালীনতায়ও জীবনের সুন্দর রংগুলো ছুঁয়ে দেখা যায়।
অসংজ্ঞায়িত কাহিন
মেয়ে : সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দাও. ছেলে : ছেড়ে দিলাম. মেয়ে : বীয়ার খাওয়া ছেড়ে দাও. ছেলে : ছেড়ে দিলাম. মেয়ে : কথা দাও আর কোন মিথ্যা কথা বলবে না. ছেলে : কথা দিলাম. মেয়ে : প্রমিজ কর এখন থেকে নিয়মিত নামাজ পরবে. ছেলে : ঠিক আছে. প্রমিজ করলাম. মেয়ে :বল আমায় বিয়ে করবে?? ছেলে : না মেয়ে : কেন??? ছেলে : এখন যেহেতু অনেক ভাল হয়ে গেছি তেহেতু তোমার থেকে অনেক ভাল মেয়ে পাব! তাইলে তোমাকে বিয়ে করব কেন????
Kostt golo
কষ্টগুলোকে আজ ছুটি দিলাম ভাসিয়ে দিলাম কান্নার লোনা জলে মুক্তি দিলাম তোমাকেও আর আসব না জ্বালাতে...।। কাঁদাবো না আর তোমার নয়ন দুটিকে হাসাবো না ওই ঠোঁট দুটিকে... ভাঙ্গব না আর ঘুম তোমার বলব না আর নির্ঘুম রাত কাটাতে....।। সত্যিই আজ মুক্ত তুমি যে বাম পাঁজরে রাখার জন্য তোমায় এতো ঝগড়া,এতো বোঝাপড়া আর নেই তুমি সেখানটাতে.... যেতে পারো তুমি অন্য কোথাও যদি অন্য কাউকে ভালো লাগে.... দাঁড়াবো না কখনো সামনে তোমার ভালোবাসার দাবি নিয়ে.....।। সত্যিই আর নেই তুমি আমার কিন্তু আমার ভালোবাসাটুকু রবে শুধুই তোমার......।।
kadiye
কাউকে কাঁদিয়ে যদি নিজেকে বড় ভাবো সেইটা হবে বড় ভুল, কারণ বিধাতা একান্ত কারো জন্য কষ্ট সৃষ্টি করেনি, অভিশাপ বলে একটি বাক্য আছে, আর সেই কষ্টের অভিশাপে একদিন তুমিও কাঁদবে:-(:-(:-
ভালবাসা কেন হারিয়ে যায়!
সম্পর্ক গড়া যতটা সহজ, রক্ষা করা আরো কঠিন। একটা আবেগ থেকে ভালবাসার জন্ম হয়। ঠিক নিষ্ঠুর আবেগের মধ্যে দিয়ে সম্পর্কগুলো নষ্ট হয়। সম্পর্ক নষ্ট হবার অনেক কারণ রয়েছে। দুইজনের ভাবের আদান প্রদান দিয়ে সম্পর্ক শুরু হয়। একটা আলোচনা হয়। বোঝাপড়া হয়। ভাললাগা মন্দ লাগাগুলো নিয়ে আলোকপাত করা হয়। কিছু বিধিনিষেধ আরোপিত হয় একে অপরের মধ্যে। (এই বিধি নিষেধগুলো প্রথম প্রথম ভাল লাগে, যদিও কারো কারো নিকট এগুলো পরবর্তীতে তিক্ততায় রূপান্তরিত হয়) কয়েকটি প্রকৃত উদাহরণ নিয়ে কথা বলতে আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস........ সম্পর্কের ভাঙ্গনের কারণসমূহ: ১. একই সময়ে অধিকসম্পর্ক বজায় রাখা: এই বিষয়টি সম্পর্ক নষ্ট করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী দায়ী। একই সাথে একাধিক মানুষকেতার জীবনে স্বাগতম জানানোঅন্যায় বৈকি। এটা মনের সাথে প্রতারণার শামিল। এটা এক ধরণের মানসিক অসুস্থতা। এই অসুস্থতা মহামারী আকারে ধারণ করেছে আমাদের বর্তমানসমাজে। যখন কোনোভাবে প্রকাশ পায়, তার প্রিয় মানুষটি অন্য একজনকেও মন দেওয়া নেওয়া করছে, তখনই দেখা দেয় বিপত্তি। মানসিক সংঘর্ষের সাথে সাথে শারিরিক সংঘর্ষও দেখা দেয়। অতিরিক্ত আবেগের কারণে অনেকে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রিয় মানুষকে ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে খুন পর্যন্তও করাতে পারে। অনেক সময় একটা বিষয় দেখা যায়, একজনের সাথে যায় যায় অবস্থা; এমন সময় নতুন কারো সাথে সম্পর্কে জড়ায়।আগাম দু:খকে লাঘবের জন্য। যখন নতুন মানুষের সাথে সম্পর্ক ভাল হয়ে ওঠে, তখন আগের মানুষটি পুরোনো হয়ে যায়। আবার কোনো কারণে নতুন মানুষটির সাথে সম্পর্ক টানা পোড়েন দেখাদিলে, পুরোনোকে স্বাগতম জানায়।এভাবে দোটানা সম্পর্ক তৈরী হয়। একই সাথে কয়েকটি জীবন নিয়ে খেলায় মত্ত হয়ে ওঠে। কোনো একটা সম্পর্কের বুলিহয়। এটা সাংঘাতিক অন্যায়। ২. বিশ্বাস ভঙ্গ করা: ভালবাসার পূর্ব শর্ত হলো বিশ্বাস। এটা ভাঙ্গলে আর সেটা ভালবাসা থাকে না। ঘৃণায় পরিনত হতে থাকে ক্রমে ক্রমে, অথচ ভালবাসা চালিয়ে যায়। কিন্তু পূর্বের মতো আর পূর্ণ ভালবাসার স্থানে চিন্তা করা যায় না। ভীতটা নড়বড়ে হয়ে যায়। শেয়ারিং বা যত্নটা যখন কমতে শুরু করে, তখনই ভাঙ্গনের রূপরেখা অংকিত হতে শুরু করে। ৩. মিথ্যা বলা: ভালবাসা সত্য, শ্বাশ্বত। মিথ্যার উপর বেশিদিন কোনো ভালবাসা টিকে থাকতে পার প্রশ্ন হলো, ভালই যদি বাসবে, তাহলে মিথ্যা কেন? যখনই প্রিয়মানুষটার পছন্দের বাইরে কোনো কাজ করে ফেলে, তখনই মিথ্যার আশ্রয় নেয়। আর প্রিয় মানুষটি জেনে ফেললে হয় বিপত্তি। ঝামেলা, চেঁচামেচি, ঝগড়া-বিবাদ এর সৃষ্টি হয়। ৪. অসুস্থ ভালবাসার প্রকৃতি অনুশীলন: ভালবাসা মানে প্রিয় মানুষটির নির্দেশ পালন নয়। ভালবাসা মানে আবদ্ধ পাখির মতো আটকে থাকা নয়। ভালবাসাটা ভেতর থেকে আসে। যদি তা না আসে, জোর করার দরকার নেই। জোর করলে তা ধরে রাখা আরো কঠিন। কোনো পাখিকে একবার আটকে রেখে ছেড়ে দিয়ে দেখো, সে তোমার কাছ থেকে কত বেগে ছুটে চলে !! তুমি কি তার জন্য বৃথা অপেক্ষা করতে পারো? নিশ্চই পারো না ! বরং ভালবেসে তাকে কাছে রাখার চেষ্টা করতে পারো। যখনই একটা মানুষ দেখে যে তার সাথে চললে সে পরাধীনতার শৃঙ্খলায় আবদ্ধ হয়ে যেতে পারে, তখনই সে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। আর সেটাই স্বাভাবিক। ৫. মনের মনুষকে অন্য কারো সাথে তুলনা করা (উচ্চাকাঙ্ এই বিষয়টি এখন অনেক বেশি দেখা যায়। তার প্রিয় মানুষটি ওর মতো ভাল না, ওর মতো চেহারা না, ওর মতো সুন্দর করে কথা বলে না, ওর বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড এর মতো দামী দামী গিফট দেয় না, ওর মতো মোবাইলে কল দেয় না, ওর মতো ফার্স্টফুডে ঘনঘন যায় না, ওর মতো হাজারটা অভাববোধ নিজের মনকে বিতাড়িত করে। ভালবাসার মান হয়ে যায় সস্তা। কেউ বুঝতে চায় না যে ভাল'র ভাল আছে। এক জায়গায় স্থির না হলে বা পূর্ণ মনোযোগী না হলে সম্পর্ক নষ্ট হবেই। ৬. সামাজিক যোগাযোগের সাইট (ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপি, গুগল প্লাস, বেশতো): সামাজিক যোগাযোগের কারণে বিভিন্ন মানুষের সাথে সহজেই যোগাযোগ স্থাপন হচ্ছে। তার কিছু খারাপ প্রভাবগুলোও চোখে পড়ার মতো। নিজেকে সস্তা করে বিক্রি করে দ ব্যাপার। ভালবাসার মানুষটিকে চোখের সামনেই দেখছে অন্য মানুষগুলোর সাথে ভাবের বিনিময় করতে। কিছু ব্যাপার হয়তো মেনে নিতে পারে না। আর সম্পর্কগুলো তখন বুলি দেওয়া হয়। মুরগী জবাই করার মতো। ৭. পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমেযাওয়া: একজনের অগোচরে কোনো খারাপ কাজে লিপ্ত হওয়াটা সত্যিই ভালবাসার পরিপন্থি। এটা কমিটমেন্টের ব্যাপার। কথা দিয়ে কথা রাখার ব্যাপার। ভালবাসার মানুষের প্রতি হৃদয়ের অন্ত:স্থল থেকে যদি টান অনুভব না করা যায়, তাহলে ভালবাসারতো কোনো প্রয়ো নেই !! ভালবাসার মানুষের প্রতি পরম শ্রদ্ধা না থাকলে ভালবাসা টিকে অন্য মানুষগুলোর কাছে ভালবাসার মানুষের সম্মানবজায় রাখাটাও জরুরী। ভালবাসার মানুষগুলোর পছন্দের বা খারাপ লাগাগুলোকে গুরুত্বের সাথেবিবেচনা করাটা সবচেয়ে জ এটা না থাকলে; ভালবাসা বলতে কিছু থাকে না।
যদি না ভালবাসো তুমি।
যদি না ভালবাসো তুমি। আকতার ফারুক হৃদয়। যদি না ভালবাসো তুমি! মিথ্যা হয়ে যাবে এ বেঁচে থাকা, মিথ্যা হয়ে যাবে পৃথিবীর সমস্থ ভালবাসা অষ্পৃশ্য হয়ে যাবে পৃথিবীর যাবতীয় প্রেম নিরবে নিঃশেষ হয়ে যাবে আমার জীবন।। যদি না ভালবাসো তুমি! নিষপ্রান হবে পৃথিবীর তাবৎ কবিতা নিদারুন শোকে পৃথিবী হারাবে তার সৌন্র্দয্য। নীল আকাশের সমস্থ নত্র নিরব নিথর আলোহীন হবে, আমার জীবন শূন্যতারমাঝে হারিয়ে যাবে বেঁচে থাকা হবে অর্থহীন, প্রচণ্ড বিষন্থায় মৌন হবে প্রতিটি প্রহর।। যদি না ভালবাসো তুমি! শুনবে- দেখবে- তুমিহীন এ আমি মাটির বুকে নিথর নিস্থব্দ হয়ে গেছি তোমার ভালবাসা না পেয়ে।।
ভালবেসে কেউ ভাল নেই...
ভালবেসে কেউ ভাল নেই.... তুমি ভাল নেই, আমি ভাল নেই ,, তুমিও দুরে, আমিও দুরে ,, সুধু বয়ে যায় হৃদয়ে রক্ত ক্ষরণ ... কোথায় এর শেষ, জানিনা !! আদও কি এর শেষ আছে ?? যতক্ষণ নিঃশ্বাস আছে , প্রতিটি সেকেন্ড কুঁড়ে কুঁড়ে খায় .. __ ভালবাসা হৃদয়ে দুঃখেরই দহন
ভুল
কাউকে কাঁদিয়ে যদি নিজেকে বড় ভাবো সেইটা হবে বড় ভুল, কারণ বিধাতা একান্ত কারো জন্য কষ্ট সৃষ্টি করেনি, অভিশাপ বলে একটি বাক্য আছে, আর সেই কষ্টের অভিশাপে একদিন তুমিও কাঁদবে:-(:-(:-
*Cotobela...
একসময় আমি খুব স্মার্ট ছিলাম , আমার বয়স তখন ৬ মাস প্রতিদিন ৪-৫ বার পোশাক চেন্জ করতাম । এখন একই ড্রেস পড়ে ৪-৫ দিন কাটিয়েদেই । একসময় আমি খুব কিউটছিলাম আমার বয়স তখন৪ বছর । আমার কিউট চেহারায় কুদৃষ্টিলাগার ভয়ে আমার আম্মু আমার কপালের বাঁ পাশে কালো টিপ দিয়ে দিতেন । এখন আর আমিকিউট নই তাই কালো টিপ দিতে হয় না । একদা আমি অনেক ভয়ংকর ছিলাম ২ বছর বয়সে আমাদের পাশের বাড়ির আন্টির কোলে উঠে তারগালে থাপ্পর মেরেছিলাম । তিনি ভয়ে আমাকে কিছুই করার সাহস পান নি । এখন আর আমি ভয়ংকর নই। কাউকে থাপ্পর দিলেই পাল্টা থাপ্পর খেতে হয় । একদা আমার হাতের লেখা খুব সুন্দর ছিল।আমি প্রথম যেদিন'অ'(স্বরে অ) লিখেছিলাম, সবাইহাততালি দিয়েছিল । সবাই বলেছিল, কত্ত সুন্দর লেখা!! এরপর সারাজীবনে কত বার 'অ'(স্বরে অ) লেখলাম !! কেউ একটা হাততালি দিল না ।
*Manus
মানুষের যদি মনের উপর নিয়ন্ত্রন থাকত তাহলে। *ভালবেসে মানুষ এত কষ্ট পেত না। *শুধু শুধু একা নিরবে ভালবেসে যেত না। *কাউকে এত বেশি মিস করত না। *অতিতের কথা এত ভাবত না। *হারানো কিছুর আফসোস করত না। *আবেগ আর বিবেকের মাঝখানে পরতে হত না। *সহজেই কাউকে ভুলে যেতে পারত। *আবেগ নামের শব্দটি পৃথিবী থেকে হারিয়ে য
Manus 2 Doroner
............... ..........পৃথিব ীতে ২ ধরনের মানুষ আছে। এক ধরনের মানুষ রাগ প্রকাশ করতে পারে, খুশি প্রকাশ করতে পারে না। আরেক ধরনের মানুষ খুশি প্রকাশ করতে পারে, রাগ প্রকাশ করতে পারে না.............
অপেক্ষায় আছি
অপেক্ষায় আছি , অপেক্ষায় থাকবো .. যত দিন বেঁচে থাকি , তোমায় মনে রাখবো .. যত কষ্ট হোক সব মেনে নিবো ,, তবুও চিরদিন তোমাকে ভালবেসে যাবো ..
ক'জন বুঝে কষ্টের মর্ম?
যার পায়ে ভালবাসার নুপূর পরানো সে কি করে বুঝবে... কান্নার কষ্ট কত ভয়ানক! ভালবাসার কষ্ট কত নির্মম! টবের যত্নের গোলাপটি কখনো বুঝবেনা পাহাড়ি জংলী ফুলটা কতটুকু অনাদর আর অবহেলার মাঝে বেঁচেআছে। আমি তো নই কারো প্রিয় পাত্র আমি নই কারো সখের গীটার, তাই আমি পারি না- কারো মনে ভালবাসার সুর সৃষ্টি করতে। আমি দেবদারুর মতো একা কান্না আমাকে ভিজিয়ে দেয়, কাদাঁয়। কেঁদে নিঃশেষ করি ব্যাথার পাহাড়। ঝলমলে রঙিন মন আমার ও আছে কিন্তু নেই নেবার মতো কেউ! সেই মনের ভারে অস্থির হয়ে আমি নিরবে নিভৃতিতেকাঁদি.. .. ..! বুঝ না তুমি, বুঝে নাভালবাসা, বুঝে না গোলাপ, বুঝে না প্রেয়সী, সুখের দোলনায় দোলায়িত ক'জন বুঝে কষ্টের মর্ম?
Sopno2
তুমি আমার ঘুম তবু তোমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখি না তুমি আমার সুখ তবু তোমায় নিয়ে ঘরবাঁধি না। তুমি আমার খোলা আকাশ কখনোও সূর্য দেখিনা তুমি আমার দিন থেকে রাত আমি যে সময় জানিনা আমি বৃষ্টি চাই অবিরত মেঘ তবু সমুদ্র ছোঁব না মরুর আকাশে রোদ হবো শুধু ছায়া হবো না.... (¯`v´¯) `•.¸.•´ ... ¸.•°*”˜˜”*°•. ` `... ¸.•°*”˜˜”*°•. ℱ £övë ýøü âñgë£ ℱ


ভালবাসা মানে কি ?

ভালবাসা মানে কি ?
একে অপরের হাতে হাত রাখা ,
নাকি দূর থেকে তার চোখে চোখ রাখা ?
ভালবাসা মানে কি ?

একই পায়ের ছন্দে পাশাপাশি এগিয়ে চলা .
নাকি , অফুরন্ত না বলা কথা গুলো বলে চলা ?
ভালবাসা মানে কি ?
গভীর সুমুদ্রে মিশে যাওয়া আকাশ কে দেখা ,
নাকি , একেঅপরের চোখে নিহিত ভালবাসা কে দেখা ?
ভালবাসা মানে কি ?
লিখতে পড়তে শুধু তার ই কথা মনে করা .
নাকি , বইয়ের পাতায় শুধু তার ছবি ভেসে উঠছে মনে করা ?
ভালবাসা মানে কি ?
সমস্ত কাজকে ভুলে যাওয়া ,
নাকি , প্রতিটা মুহুর্তে শুধু তাকেই মনের মাঝে খুঁজে পাওয়া ?
ভালবাসা মানে কি ?
সময়ের মুল্য দেওয়া .
নাকি , তাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতে মূল্যবান সময় কে নষ্ট হতে দেয়া ?
ভালবাসা মানে কি ?
নিজের সমস্ত ইচ্ছা কে দমিয়ে দেওয়া .
নাকি , তার সমস্ত ইচ্ছা কে গুরত্ব দেওয়া ?
ভালবাসা মানে কি ?
মিথ্যা কথার খনি আগলা করা ,
নাকি , মিথ্থা কথা কে রং চড়িয়ে সত্যি করা ?
ভালবাসা মানে কি ?
অন্ধকার রাস্তা ধরে পাসাপাসি হেটে চলা ,
নাকি , যা পাওয়া হয়নি এখনো ,তার জন্য প্রতিক্ষা করে চলা ?
ভালবাসা মানে কি ?
রঙিন প্রজাপ্রতি কে ইচ্ছামত কাছে পাওয়া .
নাকি , অধরা অন্য কারোর দিকে বারে বারে ছুটে যাওয়া ?
ভালবাসা মানে কি ?
মনের কোনো অজানা তৃষ্ণাকে মেটানো ,
নাকি , দুটি ঠোটের স্পর্শে তৃষ্ণা কে মেটানো ?
ভালবাসা মানে কি ?
কল্পনার আনন্দে ভেসে থাকা ,
নাকি , শরীরের স্পর্স আনন্দে মেতে থাকা ?
ভালবাসা মানে কি ?
দুটি শরীর এক হওয়ার টান ,
নাকি , প্রেম নিছক ই মনের দুরন্ত টান ?
ভালবাসা মানে কি ?
পৃথিবীর কিছু অদেখাকে দেখার আসা ,
নাকি , শুধু ই মনের ও চোখের নেশা??

আমি তোকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাবো.....

আমি তোকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে যাবো.....
ছেলে : চুপ থাক.....
মেয়ে : তুই কথায় কথায় বলিস আমাকে ভালবাসিস না.....
ছেলে : চুপ থাক.....
মেয়ে : হু.. এখন তো আমার কথাও শুনতে ভাল লাগেনা...
ছেলে : চুপ থাকতে বলসি নইলে কানের নিচে একটা দিব.....
মেয়ে : দে.. ওইটাই দে.....
ভালোবাসা তো দিবিনা.....
কানের নিচেই দে.....
ছেলে : চুপ করবি নাকি সত্যি লাগাব ??
মেয়ে : মেরে ফেল আর কতো কষ্ট দিবি ??
ছেলে : আমি তোরে কষ্ট দেই??
মেয়ে : হু দেস.....
ছেলে : তাহলে চলে যা দূরে.. আর কষ্ট পেতে হবেনা.....
মেয়ে : সেটাই তো চাস যে আমি দূরে চলে যাই.....
ছেলে : হু যা ভাগ তুই.....
মেয়ে : রাগ উঠতেছে কিন্তু......
ছেলে : ওইটার অপেক্ষায় তো আসি.....
মেয়ে : মানে??
ছেলে : মানে রাগলে তোকে অনেক সুন্দর লাগে.....
মন চায় বুকে চেপে ধরে রাখি অনন্ত কাল.....♥♥
মেয়ে : তুই এতো ফাজিল কেন?
ছেলে : তুই এতো ভাল তাই আমি এতো ফাজিল.....
এখন চুপ করে করে মাথা রেখে ঘুমা.....
আমি তোর নিঃশ্বাস শুনি.....♥♥

আমি তোমাকে ভালোবাসি

ভালোবাসার মানুষটি সত্যিই সবার থেকে আলাদা.....
সে যেন সবার মাঝে থেকেও সবার ওপরে.....
চোখ বন্ধ করলেও তার অস্তিত্ব ভেসে ওঠে চোখের সামনে.....♥ :)
তাকে জড়িয়ে ধরার মূহুর্ত.....
উফ্ !
সে এক অসাধারণ ফিলিংস.....♥ :D
তার কপালে আলতো করে kiss করে তাকে " i love you " বলার পর যখন প্রতিউত্তরে তার মুখ থেকে " i love u too " শুনি তখন মনে হয় এটাই পৃথিবীর সেরা বাক্য.....♥ :p
তার হাতটি ধরে বহুধুর চলার পরও মনে হয় যেন এইমাত্রই তো হাঁটা শুরু করলাম, আরো অনেক পথ পেরোলেও তখন ক্লান্তি গ্রাস করবে না.....♥ :)
তার ছোট ছোট কথায় রাগ-অভিমান করা, নাক ফুলে লাল হয়ে যাওয়ার পর যেন তাকে আরও বেশি সুন্দর লাগে তখন মনে হয় তাকে এই বুকের মাঝেই সারাটি জীবন জড়িয়ে রাখি.....♥ ^_^
আমি ভূল করলে তাকে sorry বলতেও খারাপ লাগে না.....
কারণ sorry বলা মানে তার কাছে ছোট হওয়া নয় বরং সর্ম্পকটাকেই সবকিছুর উর্ধ্বে দেখা.....♥ :)
মাঝে মাঝে গলা ফাটিয়ে চিত্কার করে বলতে ইচ্ছা করে " অননেক
বেশি ভালোবাসি তোমাকে, অননেক বেশি "......♥

তবুও তোমায় ভালোবাসি

পাগলি ,
আমি তোমার শুধু তোমার প্রেমে হারাতে চাই………
তোমাকে অনেক ভালোবাসি….অনেক….তবুও কোনদিন তোমার প্রেমে পরা হলো না…..তোমার ওই হাত দুটো ধরে কোনদিন অঝর বৃষ্টিতে ভেজা হলো না…..তবুও তোমায় ভালোবাসি…..কোনদিন তোমার ওই রেশমী চুলের ফেলায় হারিয়ে যাওয়া হলো না……তবু ও তোমায় ভালোবাসি…..কোনদিন নির্ঘুম রাতে আমার চোখের জলে তোমায় দেখে ও স্পর্শ করা হলো না……তবুও তোমায় শুধু তোমায় ভালোবাসি…….
আর তোমাকে ভুলেও কোনদিন ভোলা হলো না……কারণ আজ যে আমি তোমাতে হারিয়ে নতুন এই আমিকে খুঁজে পেয়েছি…..আর তোমাকে ভালোবাসি বলেই হয়তো বা জীবনেরমানে বুঝেছি….তাইতো জীবনের অনেক তুচ্ছ জিনিস ও আজ বড় বেশী ভালোলাগে তোমায় ভালোবেসে…….
জানিনা কতটা ভালোবাসলে তোমায় ভালোবাসা যায়……কতটা কাছে আসলে তোমার আপন হওয়া যায়….কতটা আর্তনাদে তোমার ওই অনুভূতিগুলো স্পর্শ করা যায়…..আমি এটাও জানি না কতটা চোখের জলে তোমায় পাওয়া যায়…..
আমি শুধু একটা জিনিসই জানি আর একটা জিনিসই মানি আমি শুধু তোমায় ভালোবাসি আর তোমায় ভালোবেসে যাবো…..জানি না কথাগুলো কতটা বিশ্বাসযোগ্য তোমার কাছে , তবে জেনে রেখো বিধাতা সাক্ষী থাকবে তুমি শুধু তুমি আমার কতটা অস্তিত জুড়ে আছো আর তোমাকে কতটাই ভালোবাসি……
তুমি যখন ভুল বুঝে অবুঝের মত আমার ওপর রাগ করো তখন একটা কথাই বার বার মনে হয় কতটাই না ভালোবাসো আমায় ,হয়তো এর মাঝেই লুকিয়ে আছে আমার প্রতি তোমার আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা , হয়তো বা কোনদিন তোমার বলা হবে না আমাকে…..তবুও আমি তোমার আর তোমাকেই ভালোবেসে যাবো
হয়তো বা একদিন জীবনের নিয়মে অজানা দেশে চলে যাবো….ভাবছো কেন? আমি মরে গেলেও তোমার প্রতি আমার এই ভালোবাসার মরণ হবে না কোনদিনও…..আজ তোমাকে সেই দূর থেকে ভালোবাসি, তখনও না হয় বাসবো ……
তবে যাওয়ার আগে তোমার দুঃখ গুলো চাই আমি….আমি আমার সুখের দামে তোমার দুঃখ গুলো কিনতে চাই….দেবে না আমায়? আমি যে তোমায় অনেক ভালোবাসি…….অনেক…..

কাছে আসার গল্প

খেলাধুলা,বন্ধুদ
ের সাথে আড্ডা আর টুকটাক পড়াশুনা এভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিনগুলি।ছেলেটা পড়াশুনায় ছিল চরম ফাকিবাজ।একটুও বাড়িয়ে বলছি না কারণ অতীত রেকর্ড সে কথাই বলে ।ছোটবেলা থেকেই শান্তশিষ্ট তবে লেজবিশিষ্ট । কোনো কিছুতেই তার সিরিয়াসনেস বেপারটা ছিল বলে মনে হয় না,তা না হলে কি প্রাইভেট,কোচিং বাদ দিয়ে খেলার মাঠে পরে থাকে !এতক্ষণে পাঠকরা নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন কোন ছেলেটির কথা বলছি।

এইভাবেই দেখতে দেখতে চলে গেল দিনগুলি ।এস এস সি পরীক্ষা দরজায় কড়ানাড়া শুরু করলো ।আগের রেজাল্ট সম্পর্কে না হয় নাই বললাম !টেস্ট পরীক্ষার ফলাফল ও হতাশার কিঞ্চিত ওপরে । বাকি আছে তিন মাস হঠাত করেই কেন জানি একটা দুশ্চিন্তা এসে ভর করলো ।সবসময় আম্মার মায়ামাখা মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠত ।চিন্তা করতাম কি করে সহ্য করব এই চোখের কান্না !এমনিতেই অনেক কষ্ট দিয়ে ফেলেছি এই অসম্ভব রকম ভদ্র মহিলাকে।আমার বাবাও আবার জীবিকার তাগিদে দেশ থেকে অনেক দূরে।কি বা জবাব দিবো বজ্রকঠিন বাবাকে ?আর ভাবতে পারলাম না ,মনে মনে স্থির করলাম সব বাদ দিয়ে দিব । at least চেষ্ঠাটা তো করি! যেই কথা সেই কাজ ।আমার খাটুনি আর আম্মার দোয়া সব কিছুরই যেন টাইমিং মিলে গেল ।আল্লাহ ও নিরাশ করেননি ।তারপর আমার বাবা মায়ের খুশি আর কে দেখে!সংগত কারণেই আমাকে আমার শহরের একটা কলেজে admission নিতে হলো ।সিরিয়াস পড়াশোনা না করলেও তখন মোটামুটি একটা flow তে থাকায় তেমন সমস্যা হয় নাই,রেজাল্ট ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলাম । UCC এর ফার্মগেটস্থ শাখায় কোচিং করা সত্তেও নানাবিদ কারণে কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স হয়নি ।বাবা মার চাপে বাধ্য হয়েই admit হতে হলো BRAC University তে ।শুরু হয়ে যায় নতুন করে পথ চলা । এতসব কিছুর ভিড়ে ভালবাসা নামে যে কিছু একটা আছে তা ভুলেই গিয়েছিলাম ।এতদিন যেহেতু হয়নি ধরেই নিয়েছিলাম আর বুঝি এসব আমার দ্বারা হবে না ।দেখতে দেখতে ফার্স্ট সেমিস্টারের মাঝামাঝি চলে এলাম ।দিনটা ছিল এ বছরের একুশে ফেব্রুয়ারী।একটা ছুটির দিন মানে এখন সোনার হরিণ হাতে পাওয়া !সারাটা দিন ঘুমের রাজ্যে বিচরণ করলাম । মনটা ভালো ছিলো না তাই সন্ধায় মিশুকে ফোন দিলাম ।

মিশু ,অনন্যা ,নিশাত ,মার্জিয়া ,পৃথা ,প্রিনন,অন্তরা সবাই আমার জানেজিগরী দোস্ত ।এদের নিয়ে ফেলে আসা দিনগুলো মাঝে মাঝেই বেশ স্মৃতিকাতর করে দেয়,তাছাড়া ইদানিং হোম সিকনেসটা ভালই ভুগাচ্ছে ।তাই যখন মনটা খারাপ লাগে তখন এদের কোন একজনের সাথে কথা বলে নিজেকে হালকা করার চেষ্ঠা করি ।যাই হোক,সে আরও অনেক কথা ।যা বলছিলাম,ঐদিন সন্ধায় যখন মিশুর সাথে ফোনে নানা ফাজলামিতে ব্যস্ত তখন হঠাতই শোনতে পেলাম ফোনের ওপাশ থেকে কে যেন গান গাইছে !পাঠকরা হয়তো ভাবছেন মিশু গান গাইছে !ছি...ও খুব সুন্দর করে চাপা মারতে পারলেও এই কাজটা পারে না ।আমি সাথে সাথে ওকে বললাম ওই শয়তান আর একটা কথাও বলবি না ,গানটা শুনতে দে ।মিশু ও বাধ্য মেয়ের মত চুপ করলো আর ফোনটা গানের উৎসের আরো কাছে নিয়ে গেল ।আমি নির্বাক চিত্তে পুরোটা গান মনোযোগ দিয়ে শুনলাম ।এই প্রথম খালি গলায় এত সুন্দর সুরে কাউকে গাইতে শুনলাম । তারপর মিশু জিজ্ঞাস করলো কিরে কেমন লাগলো ?তখন আমি কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলাম নিজেই জানি না ,উত্তরে মনের অজান্তেই বলে দিলাম প্রেমে পরে গেছি ।এই কথাটা আবার মিশু সেই সুরেলা কন্ঠের অধিকারিনী কে বলে দিল ।মিশুর সাথে আমার কথা তখন ও চলেই যাচ্ছিল ।কথার এক পর্যায়ে কখন যে ওই অপরিচিতা ফোনটা কেড়ে নিল আমি বুঝতেই পারি নি ।গর্ধবের মত মিশু ভেবে তার সাথে ১৫ মিনিট কথা বললাম ।সেদিন অনেক মজা করলাম আর মেয়েটা আমার সব দুষ্টামির খুরাক জুগিয়েছে । মেয়েটা ঐদিন দুষ্টামির এক পর্যায়ে আমার নাজেহাল অবস্থা দেখে মিশুর এক দুর্লভ প্রশ্নের উত্তরে বলে তার আর আমার তিন বছরের রিলেশান ,অনেকদিন পর আমাদের কথা হচ্ছেতো তাই আমরা এইভাবে কথা বলছি আরো কত কি! হঠাত করেই মেয়েটা কেমন যেন লজ্জা পেয়ে যায় আর খানিকটা অপরাধী কন্ঠে বলে উঠে কিছু মনে করবেন না একটু ফান করলাম আর কি sorry ।আমি আর কি বলব!তখন নিজেকে গাধা ছাড়া বেশি কিছু মনে হচ্ছিলো না।সেদিনই জানতে পারলাম মেয়েটার নাম সুমাইয়া ।নর্দান ইউনিভার্সিটিতে এল.এল.বি পরছে ।মিশু আর ও একসাথেই থাকে ।ফোন রাখার পর কি মনে করে যেন ফেসবুক এ মিশুর ফ্রেন্ড লিস্ট ঘেটে মেয়েটাকে বের করলাম ।আইডিটা নতুন তাই হয়ত বোকা মেয়েটা কিছু না বুঝেই নিজের ছবি প্রোফাইল পিকচার দিয়েছে ।তার মায়াবী চোখ গুলার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম ।মনে হয় তখনই সিরিয়াস রকম crush খাইছিলাম ।

তার ঠিক ২দিন পর মিশু ফোন দিয়ে বলল দোস্ত ফ্রি আছিস ? আজ বিকালে আমার হোস্টেল এর সামনে এসে পর একটু নিউ মার্কেট যাব ।সময় কাটছিল না তাই ভাবলাম একটু ঘুরেই আসি ।সাথে নিশাত ও ছিল । অনেকক্ষণ দাড়ায়ে থাকার পর মিশু বের হলো ,ওর পিছনে দেখি আরেকজন অপরিচিতা ।নিষ্পাপ চেহারাটার দিকে তাকিয়ে বারবার মনে করার চেষ্ঠা করছিলাম কিন্তু আমার স্মৃতি প্রতিবারই আমার সাথে প্রতারণা করছিল ।ঠিক এমন সময় মিশু কানেকানে বলে দিল এইটা সুমাইয়া ।আমি এমন একটা ভাব নিলাম যে মিশুকেই ভালোভাবে চিনি না ,কিছুটা লজ্জাও লাগতেছিল বটে।আমি কিছু না বুঝে মিশুকে বললাম ওই লজ্জা পাচ্ছিস কেন ?মিশু আমার দিকে আড় চোখে তাকিয়ে বলে উঠলো কথাটা কাকে বলছে বুঝছিস তো সুমাইয়া ?দেখছেন ওকে কি আমি বিনা কারণে শয়তান বলি ?অবশেষে সব তর্ক পিছনে ফেলে গেলাম নিউ মার্কেট। এর মধ্যে কয়েকবার সুমাইয়ার সাথে আমার চোখাচোখি ও হয়ে গেল,সাথে নিশাত আর মিশুর পেরা তো ছিলই । মেয়েটা মনে মনে কি ভেবেছে কে জানে !তবে ও যে লজ্জা পেয়েছে এই বেপারে কোনো সন্দেহ নেই।নিউ মার্কেট এর কাজ একটু আগেই শেষ হয়ে গেল ।সবাই ভাবছিল কোথায় যাওয়া যায় ?আমি বলে উঠলাম চল টি এস সি তে যাই ।সুমাইয়ার সাথে ঐদিন ফোনে দুষ্টামি করে বলেছিলাম আমরা টি এস সি তে দেখা করব ।কাকতালীয় ভাবে সেটাই সত্যি হয়ে গেল ।সুমাইয়া ও দেখলাম অনেকটা অবাক হলো ।বাসায় আসতে আসতে সন্ধা হয়ে গেল ।অনেক চিন্তা ভাবনার পর সুমাইয়াকে ফেসবুকে রিকুয়েস্ট পাঠাব বলে ঠিক করলাম।ওর আইডি তে ক্লিক করতেই দেখি respond to friend request !আমার তো আকাশের চাদ হাতে পাওয়ার মতো অবস্থা !তার বেশ কিছুদিন পর ছিল আবার নিশাতের জন্মদিন ।তো যথারিতি সেখানে গেলাম ।লজ্জার মাথা খেয়ে মিশুকে বলে রেখেছিলাম যেন সুমাইয়া কে সাথে নিয়ে যায় ।শয়তানটা প্রথমে আমাকে না করলেও পরে ঠিকই চমকে দিয়েছিল। অনেক ঘুরাঘুরির পর বসুন্ধরায় গেলাম কিছু খেয়ে নিশাতকে ধন্য করার জন্য ।

বন্ধুরা মজা নেয়ার জন্য নিশাতকে দেয়া ফুল আমাকে ধরিয়ে দিয়ে সুমাইয়ার সামনেই বলে ওকে দেয়ার জন্য ,যদিও সবই ছিল ফাজলামি তবু ও কেমন যেন লাগছিল !অবশেষে মানসম্মান রক্ষার্থে নিজের চেষ্ঠার সর্ব্বোচ্চ প্রয়োগ করলাম ।এখানেই শেষ হলে তো ভালই ছিল কিন্তু পরে যা হলো !

শয়তান গুলা সুমাইয়ার গালে কেক এর ক্রিম লাগিয়ে দিয়ে আমাকে বলল মুছতে !আমি তো পুরা শেষ !ওরা কেউ তো এগিয়ে আসছেই না বরং বেচারীকে নিজের হাতেও মুছতে দিচ্ছে না ।মুখে লজ্জার লালবর্ণ মিশ্রিত মিষ্টি হাসি লাগিয়ে বেচারী আমার দিকে তাকিয়ে রইলো ।কি আর করা !অবশেষে চোখ বন্ধ করে মুছে দিলাম ।কপালটা ভালো সুমাইয়া মাইন্ড করে নাই ।ও বেপারটাকে ফ্রেন্ডলি ভাবেই নিয়েছিল ।ঐদিন রাতেই অজানা নাম্বার থেকে একটা এস এম এস আসে 'আজকে কার সাথে এত ঘুরাঘুরি করলেন ?'আমি দুষ্টমি করেই রিপ্লাই দিলাম কেন আমার বউ এর সাথে ।কোনো এস এম এস আসে না দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ।সুমাইয়া কি না শিওর হবার জন্য কল দিলাম ।৩য় বার কল রিসিভ করলো ।শুরু হয় ফোনালাপ।আমরা আমাদের টুকটাক সব কিছুই শেয়ার করতাম।আস্তে আস্তে সম্পর্কটা আপনি থেকে তুমিতে নেমে আসল,অপরিচিতা থেকে খুব কাছের একজন মনে হতে লাগলো । জানতে পারলাম প্রেম ভালবাসার প্রতি ওর চরম বিরক্তির কথা ।এই বেপারে কোনো ছেলেকেই সে বিশ্বাস করে না এবং নিজের দিক থেকে যথেষ্ট যুক্তি ও দেখায় ।আমি ওকে কিছু বলি না ।এভাবেই চলে যায় অনেকগুলা দিন ।প্রতিদিন ওর কথা ভাবতাম আর কিভাবে প্রপোস করব তার নকশা আকঁতাম ।ওর উত্তরটা কি হতে পারে সেটা ভেবে থমকে যেতাম তবু কেন যেন মনের কোনে একটু আশা লুকিয়ে থাকতো !আমরা প্রায়ই দেখা করতাম।আমি সবসময় পাগলিটার জন্য তার প্রিয় পার্ক চকলেট নিয়ে যেতাম।এটা পেয়ে ও যে কি খুশি হত তা বলে বুঝাতে পারব না !তার হাসির শব্দে আমি আনমনে হয়ে যেতাম । মেয়েটা খাওয়া দাওয়ার বেপারে সবসময় উদাসীন ।এইতো একদিন তার হোমটাউন রাজবাড়ী থেকে না খেয়ে চলে আসে ,একে তো লম্বা journey করে এসেছে আবার বলে দুপুরেও খাবে না ।কারণ হোস্টেলে এসে দেখে তার রান্না দেয়া হয় নাই ।ঐদিন আমি ওকে অনেকটা জোর করেই নিয়ে খাওয়াই ।এর জন্য যে কত কিছু করতে হয়েছে !এইরকম ছোটখাটো বেপারগুলা কিভাবে যেন আমার চোখ এড়াতে পারতো না ।এভাবেই কেটে যাচ্ছিল দিন। ওই দিনটা ছিল ৪ এপ্রিল,সুমাইয়ার সাথে বিকালে দেখা করতে যাওয়ার কথা।সুমাইয়াই বলেছিল যেন ৩টা বাজার ঠিক ১০ মিনিট আগে উপস্থিত থাকি।কিন্তু ঢাকা সিটির সেই চিরচেনা জ্যামের কাছে হার মেনে ঠিক সময় মত পৌছাতে ব্যর্থ হলাম ।আর তার কি রাগ !সেজান পয়েন্টে ওর প্রিয় ফুচকা খেলাম তবু রাগ কমে না।তারপর জিয়া উদ্যান গেলাম।আমি একাই পাগলের মত বকবক করতে লাগলাম হঠাৎ আমার দিকে এমন একটা চাহনী দিল আমি অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম !হাসতে হাসতে বলে উঠলাম তুমি রাগলে তোমাকে আরো সুন্দর দেখায় ।মনে হলো আগুনে পানি ঢালার পরিবর্তে কেরোসিন ঢেলে দিলাম !সবশেষে উপায় না পেয়ে পার্ক চকলেট এর শরণাপন্ন হলাম ।ওকে লুকিয়ে চকলেট টা ওর পাশে রাখলাম।কিছুক্ষণ পর আচমকা চিত্কারে আমার বুক কেঁপে উঠল।বুঝতেই পারছেন !ঐদিন অনেক কথা হলো,হটাৎ আবিষ্কার করলাম ও আমার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে।আমি ওর চোখের সামনে হাত নাড়িয়ে ওকে চিন্তার জগৎ থেকে মুক্তি দিলাম।এইবার ওঠার পালা,হেঁটে চললাম সুমাইয়ার হোস্টেলের দিকে।যাওয়ার পথে ফার্মগেট রেস্টুরেন্ট থেকে চা খেলাম।এখানকার চা নাকি ওর অনেক ভালো লাগে ।অবশেষে ওর হোস্টেলের সামনে গেলাম ,ঐখানে একটা দোকানে ঢুকলাম।অনেকগুলো কলম দেখিয়ে আমাকে বলল কোনটা পছন্দ ?একটা choose করলাম।তারপর বলল একটু বাইরে গিয়ে দাড়াও,আমি আসছি। কিছুক্ষণ পর বের হয়ে আসল ।আমাকে চোখ বন্ধ করতে বলল।আমি চোখ বন্ধ করলাম,বুঝতে পারছি আমার হাতে কিছু দিচ্ছে !হঠাৎ কানের পাশে আস্তে করে কিছু ইংরেজি শব্দ শুনলাম ,যেগুলো এক করলে দাড়ায় আই লাভ ইউ ।তখন ও আমার চোখ বন্ধ ।সবকিছু কেমন হিব্রু হিব্রু লাগছে !আর কোনো শব্দ শুনতে না পেয়ে খানিকপর চোখ খুলে দেখি হাতে সেই কলম আর একটা সাফারী ধরিয়ে পাগলীটা এক দৌড়ে হোস্টেলে চলে গেলো !আমি তো একদম ভেবাছেকা খেয়ে গেলাম।বোকার মত একই পোজে ৩০মিনিট দাড়িয়ে ছিলাম ।কলম দেয়ার কারণ অবশ্য পরে ব্যাখ্যা করেছিল ।সেটা না হয় নাই বললাম ।এখানেই শুরু।বাকিটা পথ এই পাগলিটাকে সাথে নিয়েই চলতে চাই:)।

গল্পটা উৎসর্গ করলাম আমার সে সকল বন্ধুদের ।তোদের অনেক মিস করি দোস্ত ।ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।ভালো থাকবেন ।